শিরোনাম
ডা. মোরশেদ আলী | ১৭:৫০, মে ২৯, ২০২০
চট্টগ্রামস্থ আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার, করোনাযুদ্ধের সন্মুখ যোদ্ধা, মানবিক ডাক্তারখ্যাত মোর্শেদ আলী শুরু থেকেই করোনা সচেতনতায় সরকারী দায়িত্বের পাশাপাশি জনসচেতনতা বাড়াতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে সরব রয়েছেন। শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করেই বসে থাকেননি এ মেধাবী ও জনপ্রিয় ডাক্তার। নিজের এলাকায় সুবিধা বঞ্চিত মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন ত্রাণ সহায়তা। চট্টগ্রামের জনপ্রিয় এ মানবিক যোদ্ধা সম্প্রতি তার ফেসবুকে চট্টগ্রামের রাজনীতিবিদ, বিভাগীয় কমিশনার,জেলা প্রশাসক, স্বাস্থ্য প্রশাসকের উদ্দেশে লিখেছেন খোলা চিঠি। সিটিজি সংবাদ এর পাঠকদের জন্য তা হুবুহু তুলে ধরা হলো-
আসসালামু আলাইকুম, একজন চিকিৎসক হিসেবে নয়, একজন করোনা যোদ্ধা ফ্রন্ট লাইনার হিসেবে নয়,একজন সরকারি চাকুরীজীবি হিসেবে ও নয়, একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমার এই লেখা। করোনা যখন বাংলাদেশে আসবে আসবে ভাব সেই সময় থেকেই আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জনসচেতনতা সহ বিভিন্ন করোনা প্রতিরোধে সামাজিক দায়িত্ব পালনে সোচ্চার ছিলাম। করোনা যখন এসেই পড়ল তখন একজন সম্মুখ যোদ্ধার ভুমিকায় অবতীর্ণ হলাম পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমে ও সচেতনতা তৈরির প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। একইসাথে নিজ এলাকায় কর্মহীন মানুষকে ত্রাণ সহায়তাসহ সচেতনতামুলক কাজে অংশ নিয়েছি।
প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মচারী হিসেবে সরকারের পাশাপাশি ব্যক্তি ও সমাজকে করোনাপ্রতিরোধে ভুমিকা রাখার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছি।তারই ধারাবাহিকতায় আজকের এই চিঠি।
আপনারাও নিশ্চয়ই আমার মতো গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করেছেন বর্তমানে চট্টগ্রামে করোনার ব্যাপকতা চীনের উহানের চেয়ে কম নয়। সারাদেশের দৈনিক মৃত্যুর উল্লেখযোগ্য অংশ চট্টগ্রামের।টেস্টের স্বল্পতা ও সীমাবদ্ধতার কারনে প্রকৃত করোনা রোগীর সংখ্যা কয়েকগুন। এমতাবস্থায় এমুহূর্তে চারটি করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে সিট স্বল্পতায় রোগী ভর্তি প্রায়ই কষ্টসাধ্য।
প্রতিনিয়ত শেষ হয়ে যাচ্ছে রোগী ধারণক্ষমতা কিন্তু বেড়েই চলেছে আক্রান্তের সংখ্যা। কয়েকটি হাসপাতাল পাইপলাইন এ থাকলে ও সেগুলো চালু হয়নি। কিন্তু আমি নিশ্চিত সেগুলো চালু হলেও ভরে যেতে ২/৩ দিনের বেশি লাগবে না।
তাই এমতাবস্থায় লকডাউন শিথিলের পর যে রোগীর চাপ আসতে পারে সেটা সামলানোর জন্য কমপক্ষে ৩ থেকে ৫ হাজার শয্যা সম্পুর্ন অক্সিজেন মজুদ সহ রোগী ভর্তির জন্য প্রস্তুত রাখা প্রয়োজন বলে মনে করি।
শুধু মাত্র কাগজে-কলমে নয় বরং রোগী গেলেই ভর্তি নেবে এরকম হাসপাতাল জরুরী। চট্টগ্রামের সবাই একই প্লাটফর্মে এসে আরো সমন্বিত ও জোরালো কার্যক্রম জরুরী বলে মনে করছি। আপনারাই পারবেন পরিপূর্ণ প্রস্তুত না হওয়া পর্যন্ত সরকারের সাথে আলাপ করে শুধু চট্টগ্রাম বিভাগে অন্তত ১৫ দিন লকডাউন এর সময়সীমা বৃদ্ধি করতে প্রস্তুতি সম্পন্ন করার জন্য।
পরিশেষে আপনাদের সুস্বাস্থ্য কামনা করি। ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
লেখক : মেডিকেল অফিসার, আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতাল, চট্টগ্রাম।
আরেকটি নির্ঘুম রাত ও অসহায়ত্বের গল্প
চট্টগ্রামে করোনা পরীক্ষা নিয়ে কিছু কথা
কত করোনা রোগী থাকতে পারে আপনার আশেপাশে?
Developed By Muktodhara Technology Limited