শিরোনাম
শিব্বির আহমদ রানা, বাঁশখালী সংবাদদাতা | ১৫:৪১, জুলাই ৭, ২০২০
বাঁশখালী উপজেলার উপকূলীয় অঞ্চল ছনুয়া-শেখেরখীল সংযোগ বেইলি সেতু ও বাহারছড়া বশির উল্লাহ্ মিয়াজি বাজার বেইলি সেতুর বেহাল দশায় পথচারী ও যানবাহন চলাচলের জন্য মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। নিত্য দূর্ঘটনার কবলে পড়ছে সাধারণ যাত্রী ও যানবাহনগুলো। বেইলি সেতুগুলোর পাটাতনে মরিচা ধরায় বেশকিছু পাটাতনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। সেতুর কোথাও কোথাও বড়সড় ফুটো হয়ে পড়ে আছে। ঝুঁকিপূর্ণ এ বেইলি সেতুর উপর দিয়ে চলাচলরত যাত্রীরা মারাত্মক দূর্ঘটনায় পতিত হলেও সংস্কারের নেই কোন উদ্যোগ। বছর যায় বছর আসে জনদূর্ভোগের যেন শেষ হয় না। অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিকল্পহীন যোগাযোগের মাধ্যম সেতুদ্বয়ের সংস্কারের জন্য কতৃপক্ষের আশুহস্তক্ষেপ কামনা করেন স্থানীয়রা।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ছনুয়া-শেখেরখীল সংযোগ বেইলি সেতুটি এখন মারাত্মক ঝুঁকির কবলে। বাঁশখালীর পশ্চিম উপকূলীয় জলকদর খালের উপর নির্মিত ছনুয়া-শেখেরখীলের প্রধান যোগাযোগের মাধ্যম সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের চলাচল সহ মালবাহী নানা যানবাহন যাতায়ত করত। উপকূলীয় এলাকার ছনুয়া ও শেখেরখীল ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষ সাগরে মৎস্য আহরণে নিয়োজিত থাকে। বঙ্গোপসাগর থেকে বড় বড় ট্রলারে মাছ ধরে নিয়ে আসে জলকদরের তীরে। আর সকাল-সন্ধ্যায় পরিবহনে ব্যবহৃত হয় গুরুত্বপূর্ণ সেতুটি। সেতুটি বেশ অর্থনৈতিক গুরুত্ব বহন করে। বর্তমানে সেতুর পাটাতন ভেঙ্গে গিয়ে সাধারণভাবে চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়ে। দ্রুত সংস্কার করা না হলে সেতুর মূল অস্তিত্বও খুঁজে পাবেনা বলে ধারণা করেন স্থানীয়রা।
শেখেরখীল ইউপি সদস্য মু. শাকের উল্লাহ সিটিজি সংবাদকে জানান, 'এ সেতু দিয়ে দৈনিক পাঁচ হাজারের অধিক মানুষের চলাচল হয়। পাটাতন ভেঙ্গে গিয়ে সেতুটি এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে ছনুয়া-শেখেরখীলের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন প্রায়। উপজেলা প্রশাসন ও সওজ কর্তৃপক্ষ কোন খোঁজ-খবর নিচ্ছে না বলেও দাবী করেন তিনি।,
অপরদিকে, উপকূলীয় ৪ নম্বর বাহারছড়া ইউনিয়নের বশির উল্লাহ মিয়াজী বাজার বেইলি সেতুর বেহাল দশা। সেতুর বেশ কয়েকটি পাটাতনে মরিচা ধরে ভেঙ্গে পড়ায় সেতু সংযোগ সড়কের সাধারণ যাত্রীদের চলাচল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। অতিদ্রুত যদি সেতুর সংস্কার করা না হয়, তাহলে সংযোগ সড়ক দিয়ে ওই এলাকার ১৩ গ্রামের হাজার হাজার মানুষের সাথে উপজেলার প্রধান সড়কের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
সূত্রে জানা যায়, বাহারছড়া ইউনিয়নের ইলশা গ্রামের পশ্চিমে বাহারছড়া গ্রামের মাঝামাঝি বশির উল্লাহ মিয়াজী বাজারের একটু পশ্চিমে খালের ৯০ ফুট উপরে ২০১৬ সালে এ বেইলি সেতুটি নির্মিত হয়েছে। নির্মাণের পর এই সেতুটি জনসাধারনের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হলেও উদ্বোধনের ৩ বছর পার না হতেই বেশকয়েটি পাটাতন ভেঙ্গে গিয়ে মারাত্মক হুমকির মধ্যে পড়েছে জনসাধারণের স্বাভাবিক চলাচল ব্যবস্থা। দীর্ঘসময় পার হলেও এখন পর্যন্ত উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সাধারণ যাত্রীসহ যানবাহন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়া সেতুর উপরে রাতের আঁধারে চলাচলের সময় ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে নিত্যদিন।
বাহারছড়া বশির উল্লাহ্ মিয়াজি বাজার পূর্বকূল বণিক সমিতির সভাপতি মু. কামাল উদ্দিন, সিটিজি সংবাদকে বলেন, 'ব্রিজের পাটাতন ভেঙ্গে যাওয়ায় ঝূঁকির মধ্যে পারাপার করছে সাধারণযাত্রী ও যানবাহন। প্রতিনিয়ত মারাত্মক দূর্ঘটনার কবলে পড়ছে লোকজন। পশ্চিমে উপকূলীয় বাহারছড়া সমুদ্র সৈকতে প্রতিদিন শতশত দর্শনার্থী এ সেতুর উপর দিয়ে যাতায়ত করে। দ্রুতই সেতুর সংস্কার করা না হলে দূর্ভোগ পোহাতে হবে হাজার হাজার লোকজনকে।'
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম ভূইয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সিটিজির প্রতিবেদককে বলেন, 'সেতু দু'টির ঝূঁকিপূর্ণ অবস্থার বিষয়ে আমি অবগত আছি। উধ্বর্তন কতৃপক্ষ বরাবর প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। চলতি বছরের নভেম্বর মাসে টেন্ডার হবে। জনদূর্ভোগ লাঘবে দ্রুত সংস্কারের কাজ সম্পন্ন করা হবে বলেও জানান তিনি।
Developed By Muktodhara Technology Limited