শিরোনাম
এস এম ওয়াহেদ রনি | ০০:১১, আগস্ট ১১, ২০২০
চট্টগ্রাম শহরের উত্তর পূর্ব প্রান্তে চট্টগ্রাম সরকারী কলেজের দক্ষিন পার্শ্বে হযরত মৌলানা মিছকিন শাহ্ (রঃ) এর মাজারের সম্মুখে অবস্থিত কাজেম আলী স্কুল এন্ড কলেজ। এই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা শেখ-ই চাঁটগাম কাজেম আলী মাষ্টার সমগ্র দেশবাসীর একজন সম্মানিত নেতা। বৃটিশের বিরূদ্ধে স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতা কাজেম আলী মাষ্টার ১৮৫১ সালের ১১-ই আগষ্ট তৎকালীন পাঁচলাইশ বর্তমানে চাঁন্দগাও থানার বহদ্দারহাটের ফরিদের পাড়ায় জন্মগ্রহন করেন। তার পিতার নাম মরহুম কাছেম আলী উকিল। ৯ মাস বয়সে তিনি মাতৃহারা হন। দাইমার হাতে তিনি চাচা উজির আলীর বাড়ীতে লালিত পালিত হন। সৎ মায়ের উপর রাগ করে তিনি ৬ মাস পোড়া মরিচ দিয়ে ভাত খেয়েছিলেন।
তিনি বাল্যকালে পৈত্রিক মহিষ চড়াতেন ও একটি মক্তবে অধ্যয়ন করেন। পরে তিনি হুগলী থেকে এনট্রান্স পাশ করেন। বাড়ী ফিরে এসে তিনি সাতকানিয়া থানার চুনতি গ্রামে শিক্ষকতা আরম্ভ করেন। পরে তিনি ১৮৮৮ সালে নিজে জয়গা কিনে চিটাগাং মডেল ইংলিশ স্কুল স্থাপন করে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। যেটা বর্তমানে কাজেম আলী স্কুল এন্ড কলেজ নামে পরিচিত। এসময় তিনি ফরিদের পাড়া ছেড়ে বাকলিয়া চলে আসেন।
তিনি ছিলেন হিন্দু মুসলিম ঐক্যের প্রতীক, কংগ্রেস মুসলীম লীগ চট্টগ্রাম এসোসিয়েশন খিলাফত কমিটি সহ বহু প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত ছিলেন তিনি।
নবাব সলিমুল্লাহ ব্যারিষ্টার, আবদুর রসুল, অশ্বিনী কুমার দত্ত ও যাত্রা মোহন সেন প্রমূখের সাথে তিনি কংগ্রেসের টিকেটে ভারতীয় পার্লামেন্টের সদস্য হন। সংসদ অধিবেশন চলাকালে ১৯২৬ সালের ১২-ই ফেব্রুয়ারী তিনি দিল্লীতে ইন্তেকাল করেন। দিল্লী শাহী জামে মসজিদ প্রঙ্গনে একনো উনার মাজার রয়েছে।
তিনি চট্টগ্রাম মিউনিসিপালিটির একজন কমিশনার ছিলেন। অসহযোগ আন্দোলনের নেতা হিসেবে তিনি দেশপ্রিয় যতীন্দ্র মোহন সেন গুপ্ত ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দের সাথে কারাবরন করেন। মরহুম মওলানা মোঃ মনিরূজ্জামান ইসলামাবাদী সাহেবের সমাজসেবা মূলক কাজেও তিনি সর্বদা সহযোগিতা করতেন। কোন ছাত্র স্কুলে না এলে, রাস্তায় দেখা হলে তিনি লাঠি ও ছাতা দিয়ে মারতেন। ঐতিহ্যবাহী লালদিঘীর ময়দানে এক জনসভায় তিনি ঘৃনিতভাবে বলেছিলেন যে, এই দেশের জনসাধারনের পেশাবেও ইংরেজ প্রভুরা ভেসে যাবে। তাদের ভয় পাওয়ার কি আছে?
মরহুম শেখ-ই চাঁটগাম কাজেম আলী মাষ্টার শেখ ফরিদের বংশধর। তার চাচা মরহুম উজির আলী একজন দরবেশ ছিলেন। বর্তমানে বাকলিয়ার মাষ্টারপুল এলাকায় তার মাজার রয়েছে।
তার পুত্র মরহুম একরামুল হক ১৯৪৫ সালে কেন্দ্রীয় আইন পরিষদে মরহুম শেখ রফিক উদ্দিন সিদ্দিকের সাথে প্রতিদ্বন্ধিতা করেছিলেন।
লেখকঃ কাজেম আলী মাষ্টারের প্রপৌত্রি পুত্র
Developed By Muktodhara Technology Limited