শিরোনাম
আবুল কাশেম, কুতুবদিয়া (কক্সবাজার) সংবাদদাতা | ২৩:৪৫, অক্টোবর ১৫, ২০১৮
কক্সবাজার জেলায় কুতুবদিয়া উপজেলায় অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। প্রতি বছর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবসে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনোটিতে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরী করে দিবস পালন করা হয়। রাষ্ট্রভাষা বাংলা প্রতিষ্ঠার প্রায় ৬৬বছর পরও এখানের শিক্ষা প্রতিষ্টানে শহীদ মিনার নির্মান না হওয়ায় অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। আবার অনেক প্রতিষ্ঠানে যথাযথ ভাবে দিবসটি পালনই করা হচ্ছে না।
উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ৫৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৯টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৮টি মাদ্রাসাসহ ৬০-৭০টি বেসরকারি কিন্ডারগার্টেন রয়েছে। ৫৯ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে হাতে গুণা ক’টি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার থাকলেও বাকি বিদ্যালয়ে এখনো নির্মাণ হয়নি শহীদ মিনার। এছাড়া ৮টি মাদ্রাসার মধ্যে কোনটিতেই শহীদ মিনার নেই। কৈয়ারবিল আইডিয়াল হাই স্কুল, আলী আকবর ডেইল আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়,লেমশিখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, সতরুদ্দিন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, উত্তরণ বিদ্যা নিকেতন,ধূরুং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে কোন শহীদ মিনার নেই। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসসহ বিভিন্ন দিবসে এসকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনো কোনোটিতে অস্থায়ীভাবে বাশ, কাঠ ও কলাগাছ দিয়ে শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনার তৈরী করে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়ে আসছে। আবার কোনো কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকায় শুধু আলোচনা সভা বা মিলাদ মাহফিলের মধ্য দিয়েই এসব জাতীয় দিবস পালন করা হয়।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন ও তার পরবর্তী ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের পর প্রায় পাঁচ দশকেরও বেশি সময় অতিবাহিত হলেও এ উপজেলায় এখনো বেশির ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্থাপন করা হয়নি স্বাধীনতার অন্যতম স্মৃতির নিদর্শন শহীদ মিনার। এ অবস্থার কারণে নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা দেশ মাতৃকার টানে ভাষা দিবস, স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ সকল বীর সেনানীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনসহ জাতীয় দিবসগুলো পালনে যথাযথভাবে সুযোগ পাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, উপজেলা সদরে উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার,কুতুবদিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, কুতুবদিয়া সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়,কুতুবদিয়া সরকারি কলেজ, আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নে কবি জসিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়, দক্ষিণ ধূরুং ইউনিয়নে ধূরুং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার থাকলেও উপজেলার বেশির ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্টানে এখনো নির্মাণ করা হয়নি শহীদ মিনার। ফলে উপজেলার দূর্গম এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা প্রতি বছর জাতীয় দিবস গুলোর গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান পালনের সুযোগ থেকে বি ত হচ্ছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে উপজেলা সদরের এসব শহীদ মিনারের শ্রদ্ধা জানাতে এসে দুর্গম এলাকার শিক্ষার্থীরা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
কৈয়ারবিল আইডিয়াল হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ইসহাক হায়দার সোহেল জানান, এ প্রতিষ্টানটি এমপিও ভুক্ত হয়েছে চার বছর আগে, সরকারি ভাবে কোন অনুদান না থাকায় শহীদ মিনার নির্মাণ করা সম্বব হয়নি, ম্যানেজিং কমিটি ও কৈয়ারবিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জালাল আহমদের সাথে আলোচনা করে এ প্রতিষ্টানে শহীদ মিনার নির্মান করা হবে।
এব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার (প্রাথমিক) জিল্লুর রহমান জানান, সারা দেশে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্টানে শহীদ মিনার নেই। সরকারিভাবে কোন অনুদান না থাকায় শিক্ষা প্রতিষ্টান গুলোতে শহীদ মিনার নির্মান করা সম্ভব হচ্ছেনা। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন তিনি। কর্তৃপক্ষ আশ^স্থ করেছেন দ্রুতই প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণে উদ্যোগ নেয়া হবে।
মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ পুলিন বিহারী শীল জানান, স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরেও শিক্ষা প্রতিষ্টান গুলোতে শহীদ মিনার না থাকা দুঃখের বিষয়,নতুন প্রজন্ম ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ সঠিক ইতিহাস জানা থেকে বি ত হচ্ছে।
Developed By Muktodhara Technology Limited