শিরোনাম
শিব্বির আহমদ রানা, বাঁশখালী প্রতিনিধি | ১৪:৩৩, ডিসেম্বর ২৪, ২০২০
চট্টগ্রাম শহরের সাথে বাঁশখালীর যোগাযোগের একমাত্র বিকল্প রুট দীর্ঘ ৬৫ কিলোমিটারের ব্যস্ততম বাঁশখালী প্রধান সড়কের (পিএবি রুট) দুই পার্শ্বের ফুটপাত অবৈধভাবে গড়ে উঠা দোকানপাট ও কাঁচাবাজারের দখলে থাকায় নিত্য যানযটে ভোগছে পথচারি ও যানবাহন গুলো। সড়কের ফুটপাত দখল করে কাঁচাবাজার বসায় নিত্যদিন চরম ভোগান্তিতে অতিষ্ট লোকজন। বিশেষ করে শিলকূপ টাইমবাজারের পুরো ৩শত গজেরও বেশী অংশ জুড়ে প্রধান সড়কের ফুটপাত কাঁচাবাজারের দখলে থাকায় বাজার বারে দীর্ঘ যানযটের সৃষ্টি হয়। এতে সড়ক পথেই চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রী সাধারণকে। যথা সময়ে সরকারী-বেসরকারী চাকুরেরা পৌছাতে পারছেনা তাদের কর্মস্থলে। এমনকি এ কারণে স্বচ্ছন্দে চলাচল করতে পারছেন না পথচারীরা। যান চলাচলে ঘটছে ব্যাঘাত, সারাক্ষণই লেগে থাকছে জট।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, চাঁনপুর থেকে পুইঁছড়ি প্রেমবাজার পর্যন্ত প্রধান সড়কের ফুটপাত কাঁচাবাজার ও অবৈধভাবে গড়ে উঠা দোকানপাটের দখলে। বিশেষ করে চাঁনপুর বাজার, গুনাগরী চৌমুহনী, রামদাশহাট বাজার, বৈলছড়ি কে.বি বাজার, পৌরসভার মিয়ার বাজার, উপজেলা সদর, দারোগা বাজার, শিলকূপ টাইমবাজার, চাম্বল বাজার, নাপোড়া বাজার, পুঁইছড়ি প্রেমবাজারে নিত্য যানযটের শিকার হচ্ছে সাধারণ যাত্রী ও পথচারিরা। প্রধান সড়ক কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা কাঁচাবাজার গুলো ফুটপাত ও রাস্তা দখলে চলে গেছে। সেখানে বসেছে শতাধিক শাকসবজি, ফলমূল, তরিতরকারি ও মাছের দোকান। ফুটপাত এত সরু হয়ে গেছে যে হেঁটে চলাও যাচ্ছে না। ফুটপাত দখল করে এসব দোকানি বসছেন স্থায়ীভাবেই। আর যারা ফুটপাতে জায়গা পাচ্ছেন না, তারা মালামাল নিয়ে বসে পড়েছেন রাস্তার ওপরই। এমনকি রাস্তার বিভাজকের ওপরেও রাখা আছে ফলের ঝুড়ি, সবজির বস্তা প্রভৃতি। ফলে ঝুঁকি নিয়ে পথচারীদের চলতে হচ্ছে মূল সড়কে নেমে মাঝপথ বরাবর।
বাঁশখালী রুটে চলাচলকারী যাত্রীবাহী এস.আলম বাস সার্ভিস, সানলাইন সহ চট্টগ্রাম শহর থেকে আসা কার্গো সার্ভিস সহ বড় বড় ট্রাক গুলো একটা আরেকটাকে ক্রস করে যেতেও হিমশিম খাচ্ছে। ফুটপাত দখল করার কারণে দিন দিন সরু হয়ে যাচ্ছে বাঁশখালী-চট্টগ্রামের সাথে যোগাযোগের একমাত্র বিকল্প সড়ক বাঁশখালী প্রধান সড়কটি। তাছাড়া বে-আইনিভাবে প্রধান সড়কে থমকে দাঁড়িয়ে আছে পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি। প্রশাসনের নজরে দৃষ্টিগোচর করার পরেও সরছে না খুঁটি গুলো। এতে নিত্য দূর্ঘটার শিকার হচ্ছে যাত্রী সাধারণ। সড়ক দখল করেই সিএনজি-অটোরিকশার পার্কিং যেন দেখার কেউ নাই।
বাঁশখালী বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম বলেন, 'রাস্তা দখল করে কাঁচাবাজার বসার কারণে সড়ক জুড়ে দীর্ঘ যানজট লেগে থাকে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে আমাদের মতো চালকদের ও চট্টগ্রাম শহরগামী সাধারণ মানুষ সহ চাকরিজীবীদের।'
এস.আলম, সানলাইন, স্পেশাল, সুপার সার্ভিস ও সিএনজি অটোরিকশার বেশ কয়েকজন চালক বলেন, 'রাস্তা দখল করে কাঁচাবাজার এইটা কোন দেশের আইন আমাদের বুঝে আসেনা। কেউ কিছু বলেও না। রাস্তা হয়েছে গাড়ি চলানোর জন্য কিন্তু তারা কাঁচাবাজার ও দোকানপাট বসিয়ে অবৈধভাবে ফুটপাত গিলে খেয়েছে। এরকম যানজটের কারণে আমরা বাঁচি না।'
বাঁশখালী স্কয়ার ক্লিনিকের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. নাজমুল ইসলাম সাইমুন বলেন, ‘এই পথেই আমাদের নিয়মিত যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু বর্তমানে ফুটপাতের পুরো অংশেই বাজার বসে গেছে। চট্টগ্রাম শহর থেকে বাঁশখালীতে পৌছতে দেড়-দুই ঘন্টার পথ পাড়ি দিতে অনেক সময় তিন-সাড়ে তিন ঘন্টারও বেশী সময় লাগে। দীর্ঘ জ্যামে আটকা পড়ে যায় যানবাহনগুলো। হেঁটে চলাচলের আর কোনো উপায় নেই। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও সওজ কতৃপক্ষের সুদৃষ্টি থাকলে এরকম জনদূভোগের কিছুটা লাগব হতো।'
ফুটপাত দিয়ে হাঁটতে গিয়ে ভিড়ের কারণে সামনে এগোতে পারছিলেন না এক পথচারী। তিনি বলেন, 'ফুটপাতের যেটুকু অংশ ফাঁকা আছে, সেটা তো লোকজনের চলাচলের জন্য নয়। ওই অংশটা হলো ক্রেতাদের দাঁড়িয়ে কেনাকাটা করার জন্য। রাস্তার ওপর দোকান, মূল সড়কে হেঁটে চলা মানুষ, ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, রিকশা-সব মিলিয়ে একটা প্রচণ্ড বিশৃঙ্খল অবস্থা। একটু পর পর লেগে যায় যানজট।
অপ্রশস্থ সড়ক কাঁচাবাজারের দখলে, যানজটে নাকাল বাঁশখালীবাসী
Developed By Muktodhara Technology Limited