শিরোনাম
লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি | ১৮:৩৪, মার্চ ১, ২০২১
আদম ব্যাপারীর খপ্পরে পড়ে মালেশিয়াগামী বাংলাদেশি ৩ত্রিপুরা যুবক মায়ানমারের জঙ্গলে ৭দিন ধরে আটক। নদী ও পাহাড়ী পথে মালেশিয়ার যাওয়ার জন্য গত দু’বছর আগে ৪ যুবক দালালের খপ্পরে পড়ে। এই চারজন হচ্ছেন দানিয়েল ত্রিপুরা (২৬), পিতা অনসারাই, গ্রাম রাংসংগপাড়া ৬ নং ওয়ার্ড, গজালিয়া ইউনিয়ন, হালেহা ত্রিপুরা (৩৫), পিতা মৃত জনেরাম ত্রিপুরা, সাং কামাইজ্যাঝিরিপাড়া ২ নং ওয়ার্ড ফাইতং, হারমনী ত্রিপুরা (৩৫), পিতা বিগচন্দ্র ত্রিপুরা সাং ঐ ও ছাহ্লামং মার্মা (৪০), পিতা পেনসমং মার্মা সাং বরইতলী ৯ নং ওয়ার্ড ফাইতং লামা, বান্দরবান পার্বত্য জেলা।
বান্দরবান জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা এর স্মারক নং-২২৫৩, তাং-০৯-০৩-২০১৯ মূলে জানাযায়, বিগত দু’বছর আগে এই চারজন মায়ানমারে জেলবন্দি হয়। বাংলাদেশ থেকে নদী ও পাহাড়ী পথে পাচারকারীদের মাধ্যমে মালেশিয়া যাওয়ার পথে মায়ানমার পুলিশ তাদেরকে আটক করে। আটক চারজন মায়ানমারে ২ বছর জেল খেটে গত ২০ ফেব্রুয়ারি ছাড়া পায়। জেল থেকে মুক্ত হয়ে তারা স্বদেশে আসার জন্য মায়ানমারের আরেক দালালের মাধ্যমে জঙ্গলের পথে রওয়ানা হয়।
জানাগেছে, একদিনের পথ পাড়ি দিয়ে তারা ২১ ফেব্রæয়ারি রোহিঙ্গা প্রদেশ সীমানায় ঢুকে যায়। এর পর তাদেরকে একটি জঙ্গলে রেখে দালাল চলে যায়। এদিকে এ চারজনকে আবারো সেখানকার পুলিশ পরিচয়দানকারী তিনজনে আটক করে একটি মাচাং ঘরে জিম্মি করে রাখে। ওই দিনই জিম্মিদশা থেকে ছাহ্লামং মার্মাকে ছেড়ে দেয়া হয়। সে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে কোনমতে আরেক দালালের মাধ্যমে টেকণাফ হয়ে বাংলাদেশে নিজ গন্তব্যে আসতে সক্ষম হয়।
এখবর আটককৃত অপর তিনজনের স্বজনরা জানতে পারে। ছাড়া পাওয়া ছাহ্লামং তাদের বন্দিদশা সম্পর্কে সবিস্তারে ধারনা দেন, জেল ছাড়া পেয়ে কোথায় কিভাবে তারা দেশে আসার চেষ্টা করে। বর্তমানে জেল খেটে দেশে আসার পথে আটক বাকি তিনজনের স্বজনরা চরম উৎকন্ঠায় সময় পার করছেন। আটককৃতরা মোবাইল ফোনে জানান, তারা বাংলাদেশ সীমান্তের আনুমানিক ২২০ কি:মিটার দূরের কোন এক গভীর অরণ্যে বর্তমানে মায়ানমারের পুলিশ পরিচয়দানকারী তিন জনের জিম্মায় আটক রয়েছেন।
জিম্মিকারীরা এই তিনজনকে আটক রেখে খাওয়া-দাওয়া দিচ্ছে। কিন্তু ছাড়তেছেনা বা কখন ছাড়বেন, সে বিষয়টিও জানাইতেছেনা! আবার মুক্তিপনও দাবী করতেছেনা। তাদের আচার আচরণ অদ্ভুত বলে জানান, আটককৃতরা।
ছাড়া পাওয়া মার্মা যুবক মায়ানমারের ওই অঞ্চলের ভাষা বুঝলেও, আটককৃত বাকি তিনজন ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের হওয়ায় এরা সেখানকার কারো ভাষা বুঝতেছেনা। যার ফলে সেখানে আটককারীরা আসলে কি পুলিশ, না সন্ত্রাস, সে বিষয়েও সন্দেহ কাজ করছে জিম্মিদশায় থাকা তিনজনের স্বজনদের মনে।
এদিকে ২৮ ফেব্রুয়ারি দুপুর দু’টার সময় +৯৫৯২৬২৯৯৭৮৪৬, মোবাইল নম্বার থেকে আটককৃতরা ফোন দিয়ে তাদের আত্মীয়-স্বজনদের সাথে যোগাযোগ করেন। তারা জানান, দ্রুত তাদেরকে আনার ব্যবস্থা করা না হলে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হবে এবং কোন ধরণের মোবাইল যোগযোগের সুযোগ আর দেয়া হবেনা।
বর্তমানে এদের দরিদ্র স্বজনরা চরম উৎকন্ঠায় সময় পার করছেন। তিনজনকে উদ্ধারের জন্য স্বজনরা সরকারের সাহার্য কামণা করেছেন। বিষয়টি সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ নজরে আনা প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে লামা থানার এক কর্মকর্তা জানান, বিষয়পি কুটনৈতিকভাবে নিস্পত্তিযোগ্য। তার পরেও আমাদের যা করণীয় করবো।
Developed By Muktodhara Technology Limited