image

ভারত থেকে পালিয়ে আসা ৬ রোহিঙ্গা আটক

image

ভারতে রোহিঙ্গাদের উপর চলছে পুলিশের নির্যাতন ও ধরপাকড় তাই গ্রেফতার এড়াতে ভয়ে দালালদের মাধ্যমে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে রোহিঙ্গারা পালিয়ে এসে আশ্রয় নিচ্ছে উখিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্পে।

ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬ টার দিকে ১ পরিবারের ৬ জন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এক আত্নীয়র বাসায় আসার সময় চেকপোষ্টে ১/ইস্ট, ব্লক- এফ/১২ এ ১৪ এপিবিএনের সদস্যরা অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয় বলে রাত ১ টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ১৪ এপিবিএনের অধিনায়ক।

১৪ এপিবিএনের অধিনায়ক নাঈমুল হক পিপিএম জানান,ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর থেকে
ক্যাম্পে এক আত্নীয়র বাসায় যাওয়ার সময় চেকপোষ্টে কর্মরত এপিবিএনের সদস্যরা ১ পরিবারের ৬ জন রোহিঙ্গাকে আটক করেন।

১৪ এপিবিএনের অধিনায়ক ওই রোহিঙ্গা  পরিবারের বরাত দিয়ে আরও জানান, মোঃ সাইদ, মিয়ানমারের মংডু টাউনশিপের ফইরা বাজার এলাকায় বসবাস করতো।গত ২০১২ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অত্যাচারে মিয়ানমার থেকে ভারতের জম্মু  চলে যায়। সে দিনমজুরের কাজ করতো ভারতে। ওখানে আরও ২০০/৩০০ টি রোহিঙ্গা পরিবার আছে। ইতিমধ্যে ভারত সরকারের পুলিশী নিযার্তন ও জেল- জুলুমের পাশাপাশি বাংলাদেশে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের ভাল অবস্থায় থাকার কারণে সে তার শশুরের বাড়ি কুতুপালং ক্যাম্পে আসার সিদ্ধান্ত নেয়। সে ও তার স্ত্রী সহ পরিবারের মোট সদস্য ৬ জন। তারা জম্মু থেকে ট্রেনযোগে দিল্লি আসে। দিল্লি থেকে বাসে আসামের গোহাটি হয়ে বাংলাদেশের কুমিল্লা সীমান্তে ( সম্ভবত গোলাবাড়ী/ শংকুচাইল) দিয়ে  পার হয়। সেখানে তার কাটা আছে। জম্মু  থেকে বাংলাদেশের সীমান্ত পর্যন্ত একজন ভারতীয় দালালের মাধ্যমে আসে। সীমান্ত পার হওয়ার সময় বিএসএফ এর ধরা পড়ে। বিএসএফ এর সদস্য তাকে পিটিয়ে UNHCR  এর কার্ড নিয়ে নেয়। জম্মু থেকে বাংলাদেশে আসা পর্যন্ত দালালের সাথে পুরো পরিবারের জন্য ৩০,০০০/- ( ত্রিশ হাজার)  রুপি দিতে হয়। কুমিল্লা সীমান্ত পার হয়ে হেঁটে, সিএনজি করে কুমিল্লা  রেলস্টেশনে আসে। তারপর ট্রেনে করে চট্টগ্রাম  আসে।চট্টগ্রাম থেকে বাসে কক্সবাজার ও কক্সবাজার থেকে কুতুপালং পর্যন্ত বাসে আসে। কুমিল্লা সীমান্ত থেকে কুতুপালং পর্যন্ত সাথে এক বাঙ্গালী দালাল নিয়ে আসে। সে পুরো পথের ভাড়া দেয়।তার বাড়ী কুমিল্লা সীমান্তে বলে জানতে পারে। সে দালাল তার  মোবাইলের সকল যাবতীয় তথ্যাদি মুছে দেয়। ইন্টারন্যাশনাল রোমিং ফাংশন চালু না থাকার দরুন অন্য কোনভাবে তথ্য পাওয়া যায়নি। সে জানায় ওখানকার সব রোহিঙ্গা পরিবার বাংলাদেশে চলে আসবে। ইতিমধ্যে অনেক পরিবার চলে আসছে। 

এ বিষয়ে পরবর্তীতে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য ক্যাম্প সি আই সি'র নিকট প্রেরণ করলে তিনি তাদের ট্রানজিট ক্যাম্প প্রেরণ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

বৃহস্পতিবার ভারত থেকে পালিয়ে আসা ২ পরিবারের ১১ রোহিঙ্গা নারী পুরুষ ও শিশু আটক করা হয়।

উল্লেখ্য যে প্রতিদিনই ভারত থেকে অবৈধ পথে বর্ডার গার্ড সহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চক্ষু এড়িয়ে বর্ডার পেরিয়ে অনেক রোহিঙ্গা বাংলাদেশের চলে আসছে এবং পরবর্তীতে দালালের যোগসাজশে কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চলে আসছে। চেকপোষ্টে এপিবিএন পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার হওয়ার পর ক্যাম্প সিআইসি এর নিকট উপস্থাপন করলে তাদেরকে ট্রানজিট ক্যাম্প প্রেরণ করা হয়।

কুতুপালং ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নেতা মোঃ নুর জানান, বালুখালী, কুতুপালং ক্যাম্প ৯/৮/৬ /ইস্ট ও ৪ নং ক্যাম্পে ভারত থেকে পালিয়ে আসা কমপক্ষে ১ হাজারের অধিক রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে।