image

আনোয়ারায় বন্দুকযুদ্ধে ধর্ষক আবদুন নুর নিহত

image

আনোয়ারায় দুই গ্রæপের বন্দুক যুদ্ধে আলোচিত ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামী আবদুন নুর (২৮) প্রতি পক্ষের গুলিতে নিহত হয়।, গত শনিবার রাতে চায়না ইকোনমিক জোন সংলগ্ন হাজিগাঁও পাহাড়ে আদিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতি পক্ষের গুলাগুলিতে সে নিহত হয়।

রবিবার সকালে আনোয়ারা থানা পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে তার মরদেহ হস্থান্তর করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, স্বশস্ত্র দুই গ্রæপের আদিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে তার প্রতি পক্ষ এঘটনা ঘটাতে পারে। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা সহ চারটি মামলা রয়েছে। স্থানীয় গ্রাম পুলিশ মো. হানিফ তার লাশ সনাক্ত করে। ঘটনা স্থল থেকে একটি দেশীয় বন্দুক ,তিনটি চুরা ও চারটি কার্তুজ উদ্দার করে পুলিশ।

গত বুধবার (৩ জুলাই) রাতে আনোয়ারা ইপিজেডের একটি জুতা কারখানায় কাজ শেষে চন্দনাইশের নিজ বাড়ী ফেরার পথে কালাবিবি দীঘি চায়না ইকোনোমিক জোন এলাকার ধর্ষিত হন এক তরুণী। এ ঘটনায় সিএনজি চালকসহ ৪জন জড়িত থাকার বিষয়ে তথ্য পায় পুলিশ । বর্তমানে সে চট্টগ্রাম মেডিকের কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।

শুক্রবার রাতে চাতরী এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ ৪ অভিযুক্তের মধ্যে দুইজনকে গ্রেফতার করে। তারা  হলেন আনোয়ারা উপজেলার বৈরাগ এলাকার আনোয়ারা হোসেনের পুত্র সিএনজি চালক মো মামুন (১৮) ও পটিয়া উপজেলার দক্ষিণ ছনহরা গ্রামের  আবদুল গফুরের পুত্র  হেলাল উদ্দীন (২৮)। পরে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে দু’জনই প্রধান অভিযুক্ত হিসাবে আবদুন নুর ও শহীদের নাম জানায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দুই আসামি নিজেদের সরাসরি সম্পৃক্তার বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে অন্য দুইজনের উপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করলেও চার জনই এঘটনায় সরাসরি জড়িত ছিল সে বিষয়ে পুলিশ নিশ্চিত হয়।

এমামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মাহাবুব মিল্কি জানায়, আব্দুন নুরের মৃত দেহ মর্গে প্রেরণ করার পর ময়না তদন্ত শেষে তার স্ত্রী নাছিমা আক্তারের কাছে তার মৃত দেহ হস্তান্তর করা হয়।

আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দুলাল মাহামুদ জানায়, গত বুধবারের ধর্ষণ মামলার ঘটানয় অজ্ঞাতনামা ৪ আসামীর মধ্যে অটোরিক্সা চালাক মো. মামুন ও মো. হেলাল গ্রেফতার হলে ঘটনার মূল নায়ক আব্দুন নুর ও তার বন্ধু শহীদকে গ্রেফতারে পুলিশ বিভিন্ন জাগায় অভিযান চালালে পুলিশের গ্রেফতারের রাতে সে দেয়াং পাহাড়ের নির্জন এলাকায় আত্মগোপন করে। সেখানে গত শনিবার রাতে  স্বশস্ত্র দুই গ্রæপের আদিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে তার প্রতি পক্ষ এঘটনা ঘটাতে পারে। অথবা আব্দুন নুর গ্রেফতার হলে তার সাথে বিভিন্ন ঘটনায় জড়িত অপরাধীদের নাম প্রকাশ হওয়ার ভয়েও তার দলের লোক জন এঘটনা ঘটাতে পারে। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা সহ চারটি মামলা রয়েছে।

অপরাধ জগতে আবদুর নুর: অভিযুক্ত আবদুন নুর আনোয়ারা উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়নের মৃত আবদুস ছত্তারের পুত্র। আবদুর নূরও পেশায় একজন সিএনজি চালক। সে চালক সেজে স্থানীয় বিভিন্ন ব্যক্তির ছত্রছায়ায় এলাকায় চুরি ছিনতাই, ধর্ষণ, মারামারি, ভূমি দখল, মাদক বিক্রি সহ সব ধরনের অপরাধ করে থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে। ১০ বছরেরও অধিক সময় ধরে সে ছুরি , ছিনতাই, মারামারিসহ নানা অপরাধে জড়িত হয়ে আনোয়ারা কর্ণফুলী,বাঁশখালী সহ বিভিন্ন এলাকার তালিকা ভূক্ত অপরাধীদেও সাথে সৌখ্যতা গড়ে উঠে। সে সুবাধে সহযোগীদের সহায়তায় বিভিন্ন এলাকায় সহজে এলাকায অপরাধ সংঘঠিত করে যেত ।

তার বিরুদ্ধে ২০০৮ সালে  স্থানীয় আবু তাহের নামের এক ব্যক্তিকে  মারধর ও ছিনতাই,  ২০১৮ সালের ১৬ ই মার্চ বাঁশখালী উপজেলার বাসিন্দা জাবেদ আলীকে শোলকাটা রাস্তার মাথা থেকে অপহরণ করে টাকা, মোবাইল ছিনিয়ে নেয়া,  গত রমজান মাসে চট্টগ্রাম শহর থেকে ঈদের কেনাকাটা করে স্বপরিবারে বাড়ী ফেরার পথে পশ্চিমচাল এলাকার বাসিন্দা প্রবাসী জাহাঙ্গীর আলমকে বৈরাগ চায়না সড়কের মোড়ে ফকিরকিল এলাকায় ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা আনোয়ারা থানায় তিনটি মামলা হয়। তার মধ্যে একটি মামলায় তার বিরুদ্ধে চার্জশীট দিয়েছে পুলিশ। গত বুধবারের  তরুণী ধর্ষণের ঘটনার প্রধান আসামী হিসেবে ও তার নাম অর্ন্তভুক্ত হয়। শুধু তাই নয় এছাড়াও এলাকায় বিভিন্ন ধরণের অপরাধ সংঘটিত করার একাদিক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। জানাযায় , বৈরাগ ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের মৃত আব্দুস সাত্তারের একমাত্র পুত্র আব্দুন নুরের পরিবারে তার মা, স্ত্রী ও তিন শিশু কন্যা রয়েছে।