image

দূর্বিষহ যন্ত্রণা ভোগান্তির অপর নাম দোহাজারী-চাগাচর-ভোরবাজার সড়ক !

image

চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী পৌরসভার সঙ্গে সাতকানিয়া উপজেলার খাগরিয়া ইউনিয়নের ভোরবাজারের সংযোগ স্থাপনকারী দোহাজারী-চাগাচর-ভোরবাজার সড়কটি দীর্ঘদিন যাবত সংস্কারের অভাব ও বন্যার আঘাতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। যে কারণে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের।

জানা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ৪৩ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়কটির ৮শ ৭০ মিটার মেরামতের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করে কার্যাদেশ দেয় চন্দনাইশ উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর। ২০১৮ সালের ২৮ জুলাই মেরামতকাজ উদ্ভোধন করেন স্থানীয় সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী। মেরামতকাজ উদ্ভোধনের কিছুদিন পর টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যার পানির তোড়ে সড়কটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তিকৃত নির্ধারিত বাজেটে মেরামতকাজটি সম্পন্ন করা সম্ভব না হওয়ায় প্রকল্পটি বাতিল করা হয়।

এরপর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকল্প পরিচালক (চট্টগ্রাম-৩) মঞ্জুর সাদেকের নেতৃত্বে একটি টিম সড়কটি সরেজমিন পরিদর্শন করে গেলেও অদ্যাবধি সংস্কারকাজ শুরু হয়নি। কবে নাগাদ সংস্কারকাজ শুরু হবে এব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেননি কেউ।

সড়কটির মেরামতকাজ বাতিল করা প্রসঙ্গে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইসলাম এন্ড সন্সের কর্ণধার শাহজাহান বলেন, ৮শ ৭০ মিটার মেরামতকাজ করার জন্য আমার প্রতিষ্ঠানের সাথে যে চুক্তি হয়েছিলো সে মোতাবেক কাজটি সম্পন্ন করতে আমি কিছু নির্মাণ উপকরণ প্রকল্প এলাকায় নিয়েছিলাম। বন্যার পানির তোড়ে নির্মাণ উপকরণ ভেসে যাওয়ায় প্রায় দুই লাখ টাকা গচ্ছা দিতে হয়েছে। এরপরেও কাজটি সম্পন্ন করতে চেয়েছিলাম। বন্যার কারনে সড়কটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় আগের বাজেটে সংস্কার করা সম্ভব নয় বিধায় প্রকল্পটি বাতিল করা হয়েছে। 

এব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী রেজাউন নবী বলেন, সড়কটি মেরামত করার জন্য প্রকল্প পরিচালক (চট্টগ্রাম-৩) মহোদয়সহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে নিয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। এর আলোকে নতুনভাবে প্রাক্কলন করে একটি প্রকল্প প্রস্তুত করে অনুমোদনের জন্য প্রকল্প পরিচালকের দপ্তরে জমা দেয়া হয়েছে। আশা করি শীঘ্রই মেরামতকাজ শুরু করতে পারবো।

এব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকল্প পরিচালক (চট্টগ্রাম-৩) মঞ্জুর সাদেকের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, "বন্যার কারনে সড়কটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার কারনে ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ঠিকাদারের সাথে চুক্তিকৃত আগের বাজেটে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার সুযোগ নেই। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে আগের নির্ধারিত বাজেটের চেয়ে অনেক বেশি টাকা লাগবে। পিপিআরের আইনে বলা আছে এক কোটি টাকার প্রকল্পে দশ লাখ টাকার কাজ অতিরিক্ত করা যায়। এর বেশি ব্যয় বেড়ে গেলে করা সম্ভব নয়। আইনি বাধ্যবাধকতার কারনে আগের প্রকল্পটি বাতিল করে নতুনভাবে প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারণ করে সড়কটি মেরামতের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। শীঘ্রই মেরামতকাজ শুরু হবে বলেও জানান তিনি।

সড়কটি দিয়ে দৈনন্দিন চলাচলকারী জনসাধারণের দুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনা করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ সড়কটি দ্রুত মেরামতের উদ্যোগ নেবেন এমনটাই প্রত্যাশা করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।