image

রাউজানে সূর্যমুখী চাষে নতুন সম্ভাবনা : বেড়েছে গ্রামীণ সৌন্দর্য্যও

image

চট্টগ্রামের রাউজানে প্রথমবারের মতো সূর্যমুখীর প্রদর্শনী হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার মাঠজুড়ে বিরাজ করছে অপরূপ সৌন্দর্যময় পরিবেশ। প্রতিদিন নান্দনিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে বাগানগুলোতে অসংখ্য মানুষ ছুটে যাচ্ছেন। কেউবা ব্যস্ত সেলফিতে আবার কেউ অপরুপ সৌন্দর্যময় মুহুর্তকে ভিডিওচিত্রে ধারণ করে হাসিমুখে বাড়ি ফিরছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে নোয়াখালি, ফেনী, লক্ষীপুর,চট্টগ্রাম ও চান্দপুরে কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রামের রাউজানের বিভিন্ন এলাকায় সূর্যমুখীর প্রদর্শনী হয়েছে।

রাউজান উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, সূৰ্য্যমূখীর প্রদর্শনী গড়ে তোলেছেন এয়াছিননগরের কৃষক মাে. হাশেম, ডাবুয়ায় নুরুল আবছার, হিংগলায় মাে. ওসমান, চিকদাইর-২ রুনা আক্তার, রাউজান  পৌরসভায় হাজী নুর মােহাম্মদ, মাে. আব্দুল মােমেন, পঃ বিনাজুরীতে আমীষ তালুকদার, ওয়াইদারখীলে কাজল বড়ুয়া, মধ্যম কদলপুরে আবু তহের, পাহাড়তলীতে মাে. তাজ উদ্দিন, পশ্চিম গুজরায় নুরুল ইসলাম, উত্তর গুজারায় মােহাম্মদ উল্ল্যাহ রিমন, মগদাই এলাকায় নীলা রানী বর্মন, নোয়াজিষপুরে হায়দর আলী মানিক ও পশ্চিম গহিরায় মােঃ মঈম।
 
নদিমপুর গ্রামেও সূর্যমুখি ফুলের নান্দনিক বাগান গড়েছেন স্থানীয় কৃষক উদ্যোক্তা কৃষক মো হায়দর আলী। 
নোয়াজিষপুর ইউপি চেয়ারম্যান সরোয়ার্দী সিকদার বলেন, আমি হায়দর আলীর সূর্যমুখি ফুলের বাগান ঘুরে দেখেছি। গ্রাম-বাংলার অপরুপ সৌন্দর্যময় নান্দনিক এই বাগান দেখতে প্রতিদিন অনেক সৌন্দর্য পিপাসু মানুষ এখানে ছুটে আসে। 

রাউজান পৌরসভার কাউন্সিলর আজাদ হোসেন বলেন, এলাকায় সূর্যমুখী প্রদর্শনীর অপরুপ সৌন্দর্যময় পরিবেশ দেখে আমরা মুগ্ধ হয়েছি। আগামী মৌসুমে বিস্তীর্ণ জমিতে আমি নিজেও সূর্যমুখীর চাষ করতে মুখিয়ে আছি।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ ইমরান হোসেন ও  মিল্টন দাশ বলেন, পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডে উদ্যোক্তা কৃষক সুবল চন্দ্র বর্মন ৩৩ শতক জমিতে হাইচান জাতের সূর্যমুখী বাগান গড়েছেন। তার দেখাদেখি স্থানীয় কৃষকরা সূর্যমুখীর প্রদর্শনী করতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। 
উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা (উন্নয়ন শাখা) সঞ্জীব কুমার সুশীল বলেন, চলতি বছর ৩ হেক্টর জমিতে হাইসান-৩৩ ও উপশি জাতের ১৫টি প্রদর্শনী হয়েছে। প্রতিটি ফুলে ২৭০ গ্রাম পর্যন্ত বীজ হয়। হাইসান-৩৩ জাতের বীজ সংরক্ষণের সুযোগ নেই। শুধুমাত্র উপশি জাতের বীজ সংরক্ষণ করা যায়। সূর্যমুখী খৈল গবাদি পশু ও মাছের খাদ্য ব্যবহৃত হয়। এছাড়া খৈল পঁচন প্রক্রিয়ায় জৈব সার হিসেবে ব্যাবহার করা যায়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাব্বির আহমদ বলেন, রাউজানে প্রথমবারের মতো সূর্যমুখী চাষাবাদে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্য করেছি। ভোজ্য তেলের চাহিদা মেটাতে আগামীতে আরো ব্যাপকভাবে সূর্যমুখীর আবাদ বাড়াতে সরকারিভাবে কৃষকদের নানা সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এই চাষাবাদে একদিকে যেমন ভোজ্যতেলের চাহিদার যোগান হচ্ছে অপরদিকে গ্রামের মাঠজুড়ে অপরূপ সৌন্দর্যময় পরিবেশ বিরাজ করছে।