বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে যেসব পণ্য ব্যবহার হচ্ছে, তাতেই এখন বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। এসব সুরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবহারের পর ফেলা হচ্ছে যেখানে সেখানে। ভরে উঠছে ড্রেন-নর্দমা,খাল-বিল। লাখ লাখ রোহিঙ্গার মল-মুত্র ও দুষিত পানি যাওয়ার জন্যে খালের মধ্যে সুন্দরভাবে সংযোগ স্থাপন করা হলেও তা পরিবেশ সম্মত না হওয়ায় পানি কালো হয়ে গেছে। বায়ুসেফটিক্যাল ব্যাগে না ভরেই গৃহস্থালি বর্জ্যের সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের কাছে। সব মিলিয়ে ভয়ঙ্কর এক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারবার মাস্ক পরতে কড়াকড়ি করা হলেও ব্যবহারের পর কী করতে হবে তা বলা হচ্ছে না।
এদিকে করোনায় ব্যবহৃত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নীতির দাবি জানিয়েছেন পরিকল্পিত উখিয়া চাই এর আহবায়ক সাংবাদিক নুর মোহাম্মদ সিকদার।
উখিয়া ও রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘুরে দেখা যায়, করোনা থেকে বাঁচতে এবং আইন জোরদার হওয়ায় মাস্কের ব্যবহার বেড়েছে। তবে নিয়ম অনুযায়ী সেই মাস্ক নির্ধারিত স্থানে ফেলা হচ্ছে না। রাস্তাঘাটে, বিভিন্ন অলিগলিতে, ফুটপাতে গড়াগড়ি খাচ্ছে।
উখিয়া দারোগা বাজার, কোটবাজার, মরিচ্যা বাজার, কুতুপালং বাজার, বালুখালী, থাইংখালী স্টেশনের ড্রেনগুলো এবং বিভিন্ন স্থানের খাল-বিলে ও ড্রেন-নর্দমায় পড়ে পানি চলাচল ব্যবস্থাকে ব্যাহত করছে।
অন্যদিকে গ্লাভস, পারসোনাল প্রটেকশন, হেয়ার কাভারসহ বিভিন্ন সুরক্ষা সরঞ্জাম ময়লার ভাগাড়ে রাস্তার পাশে উখিয়া বঙ্গমাতা মুজিব মহিলা কলেজের প্রবেশ মুখে উন্মুক্ত দেখা যাচ্ছে। বায়োসেফটিক্যাল ব্যাগে ভরে এগুলো ফেলার কথা থাকলেও অনেকেই তা মানছেন না বলে এমন অবস্থা বলে মনে করছেন পরিবেশবাদী উখিয়ার সচেতন মহল। তারা বলছেন, পরিচ্ছন্নতাকর্মী বাসাবাড়ির বর্জ্য সংগ্রহের সময় ও সংগ্রহ করার পরবর্জ্য নাড়াচাড়ার মাধ্যমে এসব করোনা সুরক্ষাসামগ্রীর সরাসরি সংস্পর্শে আসছেন। ফলে করোনার এই সময়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের যেমন স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলছে, তেমনই তারা করোনার বাহক বনে যাচ্ছেন। কারণ তারাই প্রতিদিন কোনো না কোনো বাসাবাড়িতে যাচ্ছেন।
উখিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী বলেন, ফেলে দেওয়া এসব সুরক্ষা সামগ্রী করোনা ছড়ানোর মাধ্যম হিসেবে কাজ করতে পারে। ভবিষ্যতে এগুলো হয়ে উঠবে পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ।
স্থানীয় রহমত উল্লাহ বলেন, মাস্ক না পরলে প্রশাসন জরিমানা করে থাকেন। কিন্তু যত্রতত্র ফেলে সংক্রমণ আশঙ্কা যারা বাড়াচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না। আমাদের সব থেকে বড় সমস্যা হচ্ছে, আমরা সব সময় কেবল তাৎক্ষনিক বিষয়টা নিয়ে ভাবি। ভবিষ্যতে এর প্রভাব কী হবে, সেটা ভাবি না। এই বর্জ্য ভবিষ্যতে ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।
Developed By Muktodhara Technology Limited