image

সাইফুলকে পঙ্গু বানানো চালক, হেলপারের শাস্তির দাবিতে চট্টগ্রামে মানববন্ধন

image

গত ১ এপ্রিল চট্টগ্রাম নগরীর  টেক্সটাইল মোড় থেকে বিআরটিসি বাসে উঠেন দিন মজুর সাইফুল ইসলাম। নিয়ম অনুযায়ী যাত্রীদের কাছ থেকে ৬০ শতাংশ ভাড়া নেয়ার কথা। কিন্তু বাসের হেলপার যাত্রীদের কাছে শতভাগ ভাড়া আদায় করছিলেন। ভাড়ার বিষয় নিয়ে তার সাথে হেলপারের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে চলন্ত বাস থেকে সাইফুলকে ধাক্কা দিয়ে সড়কে ফেলে দেন। এসময় তার ডান পায়ের ওপর দিয়ে বাসের চাকা তুলে দেয় চালক। চিকিৎসকদের পরামর্শে গত কয়েকদিন আগে কেটে ফেলা হয় সাইফুলের আঘাতপ্রাপ্ত ওই পা। 
সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে মানবন্ধনে পঙ্গু সাইফুল ইসলামের সন্তান মোহাম্মদ ইব্রাহিম কেঁদে কেঁদে এমন কথাগুলো বলছিলেন।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় মামলা হলে অভিযুক্ত বাস চালক হাটহাজারীর ফতেপুরের মোহাম্মদ শাহজাহানের ছেলে সুমন (৪০) ও হেলপার মহেশখালীর শাপলাপুরের মাহাবুল মিয়ার ছেলে আলা উদ্দিনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। বর্তমানে তারা জামিনে বের হয়ে আমাদেরকে মামলা তুলে নিতে চাপ দিচ্ছে।  

পঙ্গু হয়ে যাওয়া সাইফুল ইসলাম চট্টগ্রামের রাউজান পৌরসভার বাসিন্দা। তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চট্টগ্রাম নগরের কুঞ্জছায়া আবাসিক এলাকায় ভাড়া বাসায় বাস করছেন

সাইফুল ইসলামের স্ত্রী হাসিনা বেগম (৪০) জানান, তাঁর স্বামী বায়েজিদ টেক্সটাইল মোড় থেকে বিআরটিসির একটি যাত্রীবাহী বাসে (ঢাকামেট্রো-ব-১১-৫৫১৭) উঠেন। প্রতিমধ্যে বাসটির চালক ও হেলপারের নিষ্ঠুরতার শিকার হন। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখান থেকে ঢাকার শেরে বাংলা জাতীয় ইনস্টিটিউট হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। চিকিৎসকরা অনেক চেষ্টা করেও সাইফুলের ডান পা রক্ষা করতে পারেনি। তিনি বলেন, সাইফুল মাঝিরঘাটে দৈনিক মজুরের কাজ করতো। আর্থিক টানাপোড়েনে তাদের সংসার চলে। এক পা হারিয়ে তিনি এখন হাসপাতালে বেডে পড়ে আছেন। ব্যয় বহুল চিকিৎসার খরচ চালাতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, বিআরটিসি কর্তৃপক্ষের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তারা কোন সাড়া দেয়নি। অর্থিক অভাবে পঙ্গু স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে শহরের বাসা ছেড়ে গ্রামে চলে যাওয়া ছাড়া আর কোন পথ নেই। 

মানববন্ধনে সাইফুল ইসলামের স্ত্রী, সন্তান ও স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। তারা সাইফুলের চিকিৎসার ব্যয়বহনের জন্য বিআরটিসি কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন।