image

পুরান ঢাকার ওয়ার্ড কাউন্সিলর জীন্নাতের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া

image

পুরান ঢাকার হাজারীবাগের ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ জিন্নাত আলীর মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত জীন্নাত আলী মানুষের কল্যাণেই নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে পুরান ঢাকার হাজারীবাগের মানুষের কাছে নিস্তব্দতা বিরাজ করছে।

জিন্নাত আলী ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২২নং ওয়ার্ড হাজারীবাগ এলাকার কাউন্সিলর। জীন্নাত ছিলেন একজন সাদা মনের মানুষ। ছিলো না তার মধ্যে কোন হিংসা, প্রতিশোধ পরায়নতা। স্বজনপ্রীতি ও প্রতিহিংসার রাজনীতিতে জীন্নাত বিশ্বাসী ছিলেন না। শিশুকালেই মাকে হারিয়ে দাদী ও নানীর আদর-স্নেহে বড় হন জীন্নাত আলী। তার পিতা রজ্জব আলী বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পরীক্ষিত সৈনিক ছিলেন। শেখ পরিবারের সঙ্গে তাদের ছিলো  রাজনৈতিক সেতুবন্ধন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কণ্যা শেখ হাসিনাও জীন্নাতের বাবা রজ্জব আলীকে কালা চাচা বলেই চিনতেন। কালা চাচার মৃত্যুতে শেখ হাসিনা এসেছিলেন সন্তানদের সমবেদনা জানাতে। সেই কালা চাচার বড় ছেলে মোঃ জিন্নাত আলী ছিলেন ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য বর্তমান মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস এর স্নেহভাজন নেতা। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ২২ নং ওয়ার্ড হাজারীবাগের কাউন্সিলর হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছিলেন ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস। নির্বাচনে বিজয়ীও হন তিনি।

জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক ও আওয়ামীলীগের রাজনীতি ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের পরিবারের সন্তান জীন্নাত আলী দেশের করোনাকালিন কঠিন সময়ে ওয়ার্ড কাউন্সিলরের দায়িত্ব নিয়েই সততার সঙ্গেই দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছিলেন। ডায়াবেটিস, কিডনি সমস্যাসহ নানা জটিলতা নিয়েই গত দেড় বছর ধরে ওয়ার্ড কাউন্সিলের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। সর্বশেষ তার শরীরে রক্ত উৎপাদন কমে গিয়েছিলো। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ৪টি ইনজেকশন নেয়ার প্রক্রিয়ায় প্রথম ইনজেকশনটি নেয়ার কয়েক দিন পরই দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন মহান আল্লাহর কাছেই।

গত দেড় বছর করোনাকালিন সময়ে সরকারি অনুদান, গরীবদের ত্রাণ সহায়তা প্রদানে সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।পূর্বে কোন সামাজিক বা প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা না থাকলেও একজন কাউন্সিলর হিসেবে তাকে বেশ সতর্কতার সঙ্গেই কাজ করতে হচ্ছিলো। যেনো কোন বদনাম বা অনিয়মের অভিযোগ না উঠে। এরপরও রাজনৈতিক কারণে কিছু সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে তাকে কঠোর হতে হয়েছে এতে অনেকে তারউপর অসন্তোষও হন।

ব্যক্তি জীবনে তিনি একজন সাদা মনের মানুষ ও সৎ সহজ সরল মানুষ ছিলেন। ছিলোনা তার মধ্যে কোন অহংকার বোধ। সাদামাটা জীবন যাপন করতেন জীন্নাত আলী। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত জীন্নাত আলী হাজারীবাগ থানা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছিলেন।

জীন্নাত স্ত্রী মর্জিনা, দুই মেয়ে উলফা ও উদবাকে রেখে গেছেন।

রোববার বাদ জোহর বিজিবি(সাবেক বিডিআর) ৫নংগেট সংলগ্ন রাস্তায় জানাজা শেষে তাকে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়।

জানাজায় অংশনেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীর, সহ সভাপতি শফিউদ্দীন আহাম্মেদ সেন্টু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদ কামাল, সদস্য মোহায়মেন বয়ান, হাজারীবাগ থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইলিয়াসুর রহমান বাবুল, সিনিয়র সহসভাপতি সামসুউদ্দীন, সহসভাপতি নাজিম উদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক সাদেক হামিদ সাজু, হাজারীবাগ থানা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল হক বাবু, হাজারীবাগ থানা আওয়ামীলীগের প্রচার সম্পাদক শফিকুর রহমান শফিক, ঢাকা মহানগর আওয়ামী যুবলীগ দঃ এর সিনিয়র সহ সভাপতি আহাম্মদ উল্লাহ মধু, সাবেক কাউন্সিলর ২২ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক তারিকুল ইসলাম সজিব, স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ বাচ্চু মিয়া, সাধারণ সম্পাদক ওসমান গনি ভূঁইয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ মোক্তার হোসেন তালুকদার, হাজারীবাগ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি বাহার, সাধারণ সম্পাদক সিরাজউদ্দীন রনি, আওয়ামী যুবলীগ ও সহযোগী ও অঙ্গে সংগঠনের নেতারা। এছাড়াও সামাজিক সংগঠন মর্ডান ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আবু নূর আসাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ওবায়দুল করিম বাপ্পিসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষ। 

এর পূর্বে মেয়র জীন্নাত আলীর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। তার সঙ্গে ছিলেন সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড কাউন্সিলর নিলুফার রহমানসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলরগন।