শিরোনাম
কক্সবাজার সংবাদদাতা | ০০:৫৮, আগস্ট ১৩, ২০২০
পুলিশের গুলিতে মেজর (অবঃ) সিনহা মোঃ রাশেদ খান হত্যা মামলার জেলে থাকা ৪ পুলিশ এবং পুলিশের দায়েরকৃত মামলার গ্রেফতারকৃত ৩ স্বাক্ষীর প্রত্যেকের ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। টেকনাফের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (আদালত নম্বর-৩) এর বিজ্ঞ বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহ্ রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে বুধবার ১২ আগস্ট সকালে পৃথক এ আদেশ দেন।
কক্সবাজার আদালতের পুলিশ পরিদর্শক প্রদীপ কুমার দাশ এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
যাদের জন্য রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে, তারা হলো, পুলিশের বহিস্কৃত কনস্টেবল সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মামুন ও এএসআই লিটন মিয়া।
পুলিশের দায়েরকৃত মামলার স্বাক্ষী গ্রেফতার হওয়া নুরুল আমিন, নাজিম উদ্দিন ও মো.আয়াছ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র্যাব-১৫ এর সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) জামিল আহমদ গত ১০ আগস্ট ও ১১ আগষ্ট পৃথক আবেদনে এ ৭ জন আসামীর প্রত্যেকের জন্য ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেছিলেন আদালতে । বুধবার ১২ আগস্ট রিমান্ড আবেদন শুনানির জন্য রাখে আদালত।
তবে পুলিশের ৪ জন আসামীকে কক্সবাজার জেলা কারাগার ফটকে গত ৮ ও ৯ আগস্ট পর পর ২দিন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে মেজর (অবঃ) সিনহা মোঃ রাশেদ হত্যাকান্ড নিয়ে তারা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেওয়ায় তাদেরকে ১০দিনের রিমান্ড চাওয়া হয় বলে রিমান্ড আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে গত ৬ আগস্ট আদালত থেকে রিমান্ডের আদেশ পাওয়া এই মামলার অপর ৩ আসামী যথাক্রমে বরখাস্ত হওয়া টেকনাফের সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছরা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের প্রত্যাহারকৃত ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলী (বরখাস্ত) ও এসআই নন্দলাল রক্ষিত (বরখাস্ত)কে রিমান্ডের জন্য এখনো তদন্তকারী কর্মকর্তার হেফাজতে নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন, কক্সবাজার জেলা কারাগারের সুপার মোহাম্মদ মোকাম্মেল হোসেন।
এদিকে,মেজর (অব:) সিনহা মো.রাশেদ খান হত্যা মামলায় জড়িত সন্দেহে ১১ আগষ্ট গ্রেফতার হওয়া পুলিশের দায়েরকৃত মামলার স্বাক্ষী ৩ জনকে ৭দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দিয়েছে আদালত।
টেকনাফের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (আদালত নম্বর-৩) এর বিজ্ঞ বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহ্ রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে বুধবার ১২ আগস্ট সকালে এ আদেশ দেন।
১১ আগষ্ট মঙ্গলবার দুপুরে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১৫) সদস্যরা অভিযান চালিয়ে ওই মামলার তিনজন মিথ্যা স্বাক্ষী নুরুল আমিন, নাজিম উদ্দিন ও মো.আয়াছকে গ্রেফতার করে। তারা টেকনাফ বাহারছড়া মারিষবনিয়া এলাকার বাসিন্দা।
গ্রেপ্তারকৃতদের বিকাল ৪টার দিকে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল আদালতে সোপর্দ করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছিলেন র্যাব-১৫।
বুধবার শুনানী শেষে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন মনঞ্জুর করেন আদালত।
জানা গেছে, গত ৩১ আগষ্ট রাত ৯ টার দিকে টেকনাফের বাহারছড়া শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে মেজর (অব:) সিনহা মো.রাশেদ খান নিহত হন। এঘটনায় সিনহার দুই সঙ্গীকেও আটক করে মাদক, পুলিশের দায়িত্ব পালনে বাঁধা, হত্যাসহ তিনটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় স্বাক্ষী করা হয় বাহারছড়া শামলাপুর এলাকার কয়েকজনকে স্বাক্ষী করা হয়। তবে স্বাক্ষীরা ঘটনার ব্যাপারে কিছুই জানেনা বলে অভিযোগ তুলে আসছিল।
কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর উপ-অধিনায়ক মেজর মেহেদী হাসান সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, আটক তিনজনকে বিকালে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে হাজির করে প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়।
গত ৩১ জুলাই খুন হওয়া মেজর (অবঃ) সিনহা মোঃ রাশেদ খানের বড়বোন ও মোঃ শামসুজ্জামানের সহধর্মিণী শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস (৪২) বাদী হয়ে চাকুরী থেকে বরখাস্ত হওয়া প্রদীপ কুমার দাশ, লিয়াকত আলী, নন্দলাল রক্ষিত, সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মামুন ও এএসআই লিটন মিয়া সহ ৯জনকে আসামী করে টেকনাফ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গত ৫ আগস্ট সকালে এই হত্যা মামলাটি দায়ের করেন। যার টেকনাফ থানার মামলা নম্বর : ৯/২০২০, জিআর মামলা নম্বর : ৭০৩/২০২০ ইংরেজি (টেকনাফ)। এ মামলায় সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ সহ ৭ আসামী এখনো কারাগারে রয়েছে।
একই ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় ৯ আগস্ট সিনহার সহযোগি শিপ্রা দেব নাথ ও ১০ আগস্ট সাহেদুল ইসলাম সিফাত জামিনে কারাগার থেকে মুক্তি পান।
Developed By Muktodhara Technology Limited