শিরোনাম
আবুল কাশেম, কুতুবদিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি | ১৮:৪০, জুন ৩, ২০২১
ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এর প্রভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ার জনজীবন। অস্বাভাবিক জোয়ারে বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ১০টি গ্রাম। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা গুলোর মধ্যে রয়েছে কুতুবদিয়ায় আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের কাহার পাড়া,কিরণ পাড়া, তেলিয়াপাড়া,সাইড পাড়া, হায়দার পাড়া, কৈয়ারবিল ইউনিয়নে মৌলভী পাড়া,উত্তর কৈয়ারবিল। এসব এলাকায় ভেঙে গেছে প্রায় ৬শ বাড়ি ঘর, বিলীন হয়েছে দেড়শ ঘর।অনিশ্চিয়তার মধ্যেও ভেঙে যাওয়া ঘরবাড়ি মেরামত ও নতুন করে তৈরির চেষ্টা করছেন ক্ষতিগ্রস্থরা। অনেকেই খোলা আকাশের নিচে দিন যাপন করছেন, টিউবওয়েল ভেঙে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। ভেঙে পড়েছে স্যানিটেশন ব্যবস্থা।
আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের কাহার পাড়ার বাসিন্দা নাছিমা আকতার বলেন, তাদের ঘরবাড়িসহ আসবাবপত্র, এক বছর বয়সী অসুস্থ সন্তানের ওষুধ পত্রসহ জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে, এখন সন্তান নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। জরুরী ভিত্তিতে ঘর নির্মাাণের জন্য আবাসন সহায়তা হিসেবে ত্রীপল,বাশঁ,টিন প্রয়োজন বলে জানান।
আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের টেকপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কুতুব আউলিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যারয় আশ্রয় কেন্দ্রে এখনও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ অবস্থান করতেছে।
কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. নুরের জামান চৌধুরী বলেন, ইয়াসের ফলে কুতবদিয়া উপজেলায় ৮০ কোটি টাকা বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩০ টন চাউল ও ২ লক্ষ টাকা সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
এব্যাপারে উপজেলা পাউবো উপ-সহকারী প্রকৌশলী এলটন চাকমা জানান, কুতুবদিয়াকে রক্ষার জন্য পাউবো ৭১ পোল্ডারের আওতায় ৪০ কি.মি বেড়ীবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে ১৫.৯০ কি.মি বেড়ীবাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে। অসম্পূর্ণ কাজ রয়েছে সাড়ে ২৩ কি.মি। এর মধ্যে সাড়ে ৮ কি.মি মারাত্মক ঝুকিপূর্ণ। তবে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ঝুকিপূর্ণ বেড়ীবাঁধ মেরামত করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
কুতুবদিয়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হাসান কুতুবী বলেন, টেকসই বেড়িবাঁধ করা না হলে প্রতিবছরই এমন সীমাহীন দুঃখের গল্প তৈরি হবে।
কুতুবদিয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সাড়ে ৮ কি.মি. বেড়ীবাঁধ ঝুকির মধ্যে রয়েছে। এ সাড়ে ৮কি.মি. মধ্যে রয়েছে উপজেলার উত্তর ধূরুং ইউনিয়নের এক কি.মি. দক্ষিণ ধূরুং ইউনিয়নের আধা কি.মি, লেমশীখালী ইউনিয়নের ১ কি.মি, কৈয়ারবিল ইউনিয়নের আধা কি.মি, বড়ঘোপ ইউনিয়নের দুই কি.মি. এবং আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নে সাড়ে ৩ কি.মি.। এছাড়াও সাড়ে ১৫ কি.মি. বেড়ীবাঁধ সংস্করনের কাজ শেষ হয়নি। এসব এলাকায় সাগরের পানি বৃদ্ধির সঙ্গে বাতাসের তীব্রতা বাড়লে যেকোনো সময় বড় ধারণের ক্ষতি হতে পারে। এ কারণে উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ চরম উৎকন্ঠের মধ্যে রয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।
Developed By Muktodhara Technology Limited