image

আজ, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং

উখিয়ায় ইয়াবা বিক্রি থেমে নেই,যুব সমাজ ধব্বংসের পথে

উখিয়া (কক্সবাজার) সংবাদদাতা    |    ০০:৩১, মে ১, ২০১৯

image

উখিয়ায় ইয়াবা গডফাদাররা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।টেকনাফে আইনশৃঙ্খা বাহিনীর হাতে নিয়মিত ইয়াবার গডফাদাররা নিহত হচ্ছে।সম্প্রতি উখিয়ায় বিজিবি ও পুলিশের হাতে ৪ জন নিহত হলেও উপজেলার সর্বত্রে ছড়িয়ে পড়ছে ইয়াবা ব্যবসা।

সারাদেশ ব্যাপী ইয়াবা ও মাদক বিরোধী অভিযান জোরদার করা হলেও উখিয়ায় তার আঁচড় লাগেনি। এমনি পাশ্ববর্তী টেকনাফ উপজেলায় মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে প্রশাসনের সাথে বন্দুক যুদ্ধে এ পর্যন্ত ৫০জন নিহত হয়েছে। এ ছাড়াও প্রতিনিয়ত হতাহতের ঘটনা ঘটছে। অথচ উখিয়ার চিহ্নিত শতাধিক ইয়াবা ও মাদক ব্যবসায়ীরা আগের তুলনায় দেদারচে ইয়াবা ও মাদক ব্যবসা চালিয়ে গেলেও প্রশাসনের কোন খবর নেই।

জানা গেছে দ্বিতীয় দফার মাদক-বিরোধী বিশেষ অভিযান শুরু করেছে র‌্যাবসহ অন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ২০১৮ সালের মে মাস থেকে দেশজুড়ে মাদক-বিরোধী অভিযানে এখন পর্যন্ত ৩৫০ জনের মতো মাদক ব্যবসায়ীকথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। টানা অভিযানের ফলে মাদক চোরাচালান ও বিক্রি অনেকটা কমে গেলেও গডফাদাররা রয়েছেন ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এবার মাদক সাম্রাজ্যের শীর্ষ গডফাদারদের টার্গেট করে অভিযানে আসছে র‌্যাব। পাশাপাশি ইয়াবার প্রবেশদ্বার খ্যাত জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান চালাবে র‌্যাবের ১৫তম নতুন ব্যাটালিয়ন।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় মাদক-বিরোধী অভিযান কিছুটা ভাটা পড়লেও আবারও জোরদার হচ্ছে এই অভিযান। গত ২ জানুয়ারি নির্বাচন পরবর্তী শুভেচ্ছা গ্রহণের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদক-বিরোধী অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণার পর প্রশাসন আবারও নড়েচড়ে বসেছে। অন্যদিকে বেশির ভাগ নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা নির্বাচনের আগে নিজ এলাকাকে মাদক মুক্ত করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো থেকে জানা যায়, গত এক বছরের মাদক-বিরোধী অভিযানে এক লাখ ৩০ হাজার মামলায় প্রায় দেড় লাখ মাদক কারবারি ও সেবনকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ১৪ মাসে সারাদেশ থেকে চার কোটি ৫০ লাখ এক হাজার ৪৩৫ পিস ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে। গত বছরের মে মাস থেকে র‌্যাব, পুলিশ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), কোস্ট গার্ডসহ গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মাদক-বিরোধী অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। র‌্যাব-পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ সারাদেশে সাড়ে তিন শতাধিক মাদক কারবারি নিহত হয়েছেন। সরকারের মাদক-বিরোধী অভিযানের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। কিন্তু নিহতের মধ্যে উখিয়ার কোন উল্লেখ্যযোগ্য গডফাদার না থাকায় অনেকটা নির্ভয়ে চিহ্নিত ইয়াবা ও মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসা অব্যাহত রেখেছে। উখিয়ার এই সিন্ডিকেটের প্রধান হচ্ছে কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা জিয়াবুল হক,সম্প্রতি পুলিশের হাতে আটক হয়ে বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে। জানা গেছে,উখিয়ার অন্যতম ইয়াবা গডফাদাররা হচ্ছে,চাকবৈঠা গ্রামের মৌলভী আলী হোছনের ছেলে তারেক,ছৈয়দুল আলম ও মাহবুল আলম এর নেত্বতে এলাকায় ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।তাদের কারণে কলেজ পড়ুয়া ছাত্র থেকে শুরু করে এলাকার যুব সমাজ ধব্বংস হচ্ছে। অল্প দিনে ইয়াবা বিক্রি করে কোটি টাকার মালিক হয়েছে বলে জানা গেছে।পাশাপাশি মরণ নেশা ইয়াবার টাকা দিয়ে উখিয়া সদর ষ্টেশনে দুটি দোকান দিয়েছে।দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের চোখ ফাকিঁ দিয়ে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। সরজমিন গিয়ে স্থানীয় কয়েকজন যুবকের সাথে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে।পাশাপাশি তারা এও দাবী করেছেন,প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি ঘটনাস্থল তদন্ত করে দেখে তাহলে ভালো মানুষের আড়ালে লুকিয়ে থাকা আসল চেহারা বেরিয়ে আসবে। উখিয়ার অন্যতম ইয়াবার গডফাদাররা হচ্ছে ঘিলাতলী গ্রামের ফয়জুর রহমানের ছেলে,মোঃশফি,যে এক সময় মাইক্রোবাসের হেলপার ছিল,বর্তমানে তার রয়েছে নামে বেনামে একাধিক নোহা গাড়ি,ব্যাংক ব্যালেন্জ,দু,তলা বাড়ি ও ৬ লক্ষ টাকা সেলামী দিয়ে পল্লী বিদ্যুত অফিসের সামনে দুটি দোকান নিয়েছে।গত ৯ মাস আগে ২০০ পিস ইয়াবাসহ থানা পুলিশের হাতে আটক হয়েছিল,জামিনে বেরিয়ে এসে আবারো পুরোদমে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।স্থানীয়রা জানান,ইয়াবা শফিকে যদি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আটক করে রিমান্ডে নেয় তাহলে তলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে বলে মনে করেন।খয়রাতির এলাকার  মাহমুদুল হক,আদালত ভবনের পেছনে ২৪ লক্ষ টাকা দিয়ে জায়গা কিনে আলিশান বাড়ি বানিয়ে বাড়া দিয়েছে।আটকের ভয়ে বর্তমানে আত্নগোপনে রয়েছে।অন্যতম গডফাদাররা হচ্ছে,মাহমুদুল হক খোকা,আতাউল্লাহসহ আরো অনেকে। র‌্যাব সূত্রে জানা গেছে , র‌্যাবের এ ব্যাটালিয়ন ইয়াবার বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযানের মধ্য দিয়ে মাঠে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিয়েছে। এ জন্য ইয়াবার প্রবেশদ্বার খ্যাত জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা হিসেবে উখিয়া,টেকনাফকে মাদক রুটগুলো মাথায় রেখে প্রস্তুতি নিয়েছে র‌্যাব। এছাড়া তিন পার্বত্য জেলায় বিশেষ মাদক-বিরোধী অভিযান পরিচালনা করবে নতুন এ ব্যাটালিয়ন।

উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল খায়ের বলেন, মাদকের ভয়াল থাবা থেকে দেশকে রক্ষা করতে পুলিশের অবস্থান সব সময়ই জিরো টলারেন্স। আমরা প্রথম থেকেই কাজ করে যাচ্ছি। মাদক নির্মূলের লক্ষে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

উল্লেখ্য যে, গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর থেকে মাদক-বিরোধী নতুন আইন কার্যকর হয়েছে। নতুন এ আইনে ইয়াবা পাচার মামলায় সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড ছাড়াও অন্যান্য ক্ষেত্রে সাজার মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ ছাড়া মাদকের তালিকায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে সিসার মতো মাদকদ্রব্য। নতুন আইনের ফলে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে আগের চেয়ে বেশি সুবিধা পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ঠরা।



image
image

রিলেটেড নিউজ

Los Angeles

০১:১৭, মে ১৪, ২০২২

বাঁশখালী ইউপি নির্বাচনে নৌকায় শেষ হাসি যাঁদের


Los Angeles

০০:৩০, মে ১৪, ২০২২

কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক ঘেষে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাঁটাতারের বেড়া


Los Angeles

১৬:২৬, অক্টোবর ১৬, ২০২১

বীর নিবাস পাচ্ছেন বাঁশখালীর ১০ মুক্তিযোদ্ধা


Los Angeles

২০:৩৩, অক্টোবর ১৩, ২০২১

তিন প্রতিবন্ধী সন্তান নিয়ে বিপাকে বাঁশখালীর এক দরিদ্র পরিবার


Los Angeles

১১:২৪, অক্টোবর ১০, ২০২১

সীতাকুন্ড ইউপি নির্বাচন : নৌকা দাবি ৪৩জনের


Los Angeles

২০:১৯, অক্টোবর ৮, ২০২১

আবিষ্কারের বিস্ময় বালক বাঁশখালীর আশির, প্রয়োজন পৃষ্ঠপোষকতা


Los Angeles

২১:৩৮, অক্টোবর ৭, ২০২১

করোনাকালে বাল্যবিয়ে : পড়ালেখায় ইতি টেনে অনেক কিশোরী এখন পুরোদস্তুর সংসারী


image
image