image

আজ, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

করোনাকালে বাল্যবিয়ে : পড়ালেখায় ইতি টেনে অনেক কিশোরী এখন পুরোদস্তুর সংসারী

কায়সার হামিদ মানিক,উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি    |    ২১:৩৮, অক্টোবর ৭, ২০২১

image

ছবি-প্রতীকী

জমিলা আক্তার। বয়স ১৫ বছর। টাইপালং মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। করোনায় মাদ্রাসা বন্ধ থাকায় গত চার মাস আগেই তার বিয়ে হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের ইচ্ছাতেই তাকে বিয়ের পিড়িঁতে বসতে হয়েছে। এভাবে জমিলার মেয়রে মতো উখিয়া বিভিন্ন উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের বাল্যবিবাহের শিকার হতে হয়েছে। উখিয়ার শতশত স্কুল মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাড়াও প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের কন্যা শিশুদের বিয়ের পিড়িতে বসতে হয়েছে।

উখিয়ায় করোনা মহামারি যেন বাল্যবিয়ের অনুকুল পরিবেশ তৈরি করেছএই মহামারিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লম্বা ছুটি থাকায় বাল্যবিয়ের উৎসব হয়েছে। কোস্ট ট্রাস্টের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

কোস্ট ট্রাস্টের মিটিংয়ে কর্মকর্তারা এমন তথ্য নিশ্চিত করে আরো বলেন, করোনাকালে কক্সবাজারের উখিয়ায় বাল্যবিবাহের হার ৭৫ শতাংশ বেড়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।

এদিকে শিশু বয়সেই সংসারের ভার কাঁধে চেপে বসায় তাদের শিক্ষাজীবন অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বাল্যবিবাহের শিকার ছাত্রীরা সবাই মাধ্যমিক স্থরের। যারা ৭ম শ্রেণি থেকে ১০ম শ্রেণি পার হতে পারেনি।

জালিয়া পালং ইউনিয়নের উপকূলীয় এলাকার ছামিয়া আক্তার (১৫) ৩ মাস আগে তার বিয়ে হয়। পরিবরের সদদস্যদের প্রত্যাশা অনুযায়ী তাকে বিয়ের পিড়িতে বসতে হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজা পালং ইউনিয়নের টাইপালং এলাকার ছেনুয়ারা (ছদ্ননাম) বলেন, আমি আমার ১৪ (চৌদ্দ) বছরের শিশু কন্যাকে বিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছি। গ্রামের এক ছেলে আমার মেয়েকে পছন্দ করে। তার একটি ছোট দোকান আছে। ছেলে ব্যবসা করে। যদি তাকে বিয়ে না দিই তাহলে অন্যত্র বিয়ে দিতে দিবে না। তাছাড়া করোনাকালিন সময়ে স্কুল বন্ধ ছিল।পরিবারে চলছে অভাব-অনটন এ অবস্থায় পরিবারের সদস্যরা মেয়ের বিয়ে ঠিক করে। আমিও ছেলেকে ভাল মনে করেছি তাই বিয়েতে সম্মতি দিয়েছি। তাছাড়া মেয়ের বাবার আয়-রোজগারও তেমন নেই।

আরেক অভিভাবক জানালেন, আমার মেয়ের বয়স তেরো বছর। সে একটি ছেলেকে পছন্দ করতো। করোনাকালিন সময়ে ছেলেটি তার বাবা-মাকে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে পাঠায়। যেহেতু মেয়েও পছন্দ করে ছেলেটিও দেখতে খারাপ না তাই বিয়ে দিয়ে দিলাম। কাবিন হয়েছে। তাই বাবার বাড়িতে থেকে সে এখনো স্কুলে যেতে পারছে। ডিসেম্বর মাসে তাকে তুলে দেওয়ার পর স্বামীর পরিবার চাইলে শ্বশুরবাড়িতে গিয়েও সে লেখাপড়া করতে আগ্রহী।

মা ফাতেমা বেগম বলেন, বাল্যবিয়ে নিষিদ্ধ এটা তিনি জানেন। কিন্তু অসহায়। একদিন না একদিন মেয়েকে বিয়ে দিতে হবে। গরিবের সংসার। অভাবের মধ্যে কর্মজীবি ভাল ছেলে পেয়ে তারা হাতছাড়া করতে চাননি। তাই এখন কলমা দিয়ে রেখেছেন। ১২ ডিসেম্বর তারা কন্যাকে তুলে দেবেন।

তিনি বলেন, গরিব মানুষের অনেক সমস্যা।থাকে। তারপরও লকডাউনের মধ্যে স্বামীর আয় নেই।, কাজ নেই, স্কুল বন্ধ, মেয়ে স্কুলে যেতে পারছে না। মেয়েকে নিয়ে চিন্তায় থাকতে হয়। সবকিছু মিলিয়ে ভেবেই বিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন।

মরিচ্যা স্কুলের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী আয়েশার চাচাত বোন হালিমার বিয়ে হয়ে গেছে গত সপ্তাহে । হালিমার নিরাপত্তাহীনতার কারণে আর স্কুলে যেতে পারেনি। খালার বাসায় থাকত। বিভিন্ন কারণে হালিমাকে অল্প বয়সে বিয়ে দিতে হয়েছে। রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা উখিয়ায় করোনাকালিন সময়ে নিরবে বাল্যবিবাহের হিড়িক পড়েছে। মেয়েদের নিরাপত্তাহীনতা, দারিদ্রতা ও অসচেতনতায় বাল্য বিবাহের হার বেড়েছে।



image
image

রিলেটেড নিউজ

Los Angeles

০১:১৭, মে ১৪, ২০২২

বাঁশখালী ইউপি নির্বাচনে নৌকায় শেষ হাসি যাঁদের


Los Angeles

০০:৩০, মে ১৪, ২০২২

কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক ঘেষে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাঁটাতারের বেড়া


Los Angeles

১৬:২৬, অক্টোবর ১৬, ২০২১

বীর নিবাস পাচ্ছেন বাঁশখালীর ১০ মুক্তিযোদ্ধা


Los Angeles

২০:৩৩, অক্টোবর ১৩, ২০২১

তিন প্রতিবন্ধী সন্তান নিয়ে বিপাকে বাঁশখালীর এক দরিদ্র পরিবার


Los Angeles

১১:২৪, অক্টোবর ১০, ২০২১

সীতাকুন্ড ইউপি নির্বাচন : নৌকা দাবি ৪৩জনের


Los Angeles

২০:১৯, অক্টোবর ৮, ২০২১

আবিষ্কারের বিস্ময় বালক বাঁশখালীর আশির, প্রয়োজন পৃষ্ঠপোষকতা


Los Angeles

২১:৩৮, অক্টোবর ৭, ২০২১

করোনাকালে বাল্যবিয়ে : পড়ালেখায় ইতি টেনে অনেক কিশোরী এখন পুরোদস্তুর সংসারী


image
image