শিরোনাম
এম আনোয়ার হোসেন, মিরসরাই সংবাদদাতা | ২৩:৫৩, জুন ২০, ২০১৯
মিরসরাইয়ের চাঞ্চল্যকর স্কুল ছাত্র ফারহান সাকিব হত্যাকান্ডের ৪ বছর পেরিয়ে গেলেও আদৌ গ্রেফতার হয়নি মামলার প্রধান আসামী। মামলার অগ্রগতি নিয়ে হতাশায় ভুগছে সাকিবের পরিবার। তারা বিচারের আর্তি নিয়ে এখনো ঘুরছে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে।
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) মামলার প্রধান আসামী গ্রেপ্তার ও বিচার কাজ দ্রুত শেষ করার দাবিতে মিরসরাই প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন সাকিবের পরিবার ও তার সহপাঠীদের সংগঠন ‘সাকিব স্মৃতি সংসদ’।
ওইদিন সকাল ১১ টায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাকিবের বড় ভাই শহিদুল ইসলাম রুবেল। এসময় সাকিব স্মৃতি সংসদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি শাহ আব্দুল্লাহ আল রাহাত, সহ-সভাপতি পার্থ ঘোষ, অর্থ সম্পাদক তানভীর হোসেন স্বদেশ, সদস্য নাইমুর রহমান জিসান, মহিউদ্দিন রাশেদ।
জানা গেছে, ২০১৫ সালের ৬ জুন মিরসরাইয়ের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জেবি উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র ফারহান সাকিবকে অপহরণের পর জবাই করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ঘটনার পরপর জোরারগঞ্জ থানায় সাকিবের বড় ভাই শহীদুল ইসলাম রুবেল বাদী হয়ে ওই বছর ১১ জুন একটি হত্যা মামলা (যার নম্বর ৯) দায়ের করেন। ইতোমধ্যে এ হত্যাকান্ডের চার বছর পার হয়ে গেছে। অথচ এখনো ধরা পড়েনি প্রধান আসামী সরোয়ার। এত বছর পর সুবিচার না পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন সাকিবের পরিবার।
মামলা সূত্রে জানা যায়, পুলিশ ঘটনার পরপর গ্রেফতার করে ধুম ইউনিয়নের উত্তর মোবারকঘোনা গ্রামের মোস্তফা কামালের পুত্র হোসনে মোবারক রুবেল, করেরহাট ইউনিয়নের দক্ষিন অলিনগর গ্রামের কামাল উদ্দিন মেম্বারের পুত্র শহিদুল ইসলাম ও ধুম ইউনিয়নের উত্তর মোবারকঘোনা আদর্শ গ্রামের মৃত আবু তাহেরের পুত্র মীর হোসেনকে। এদের মধ্যে রুবেল জামিনে বেরিয়ে গেছে। এছাড়া মামলার অন্যতম প্রধান আসামী কাজী সরোয়ার উদ্দিন ও অপু চন্দ্র নাথ এখনো গ্রেপ্তার হয়নি।
সাকিবের সহপাঠীদের সংগঠন ‘সাকিব স্মৃতি সংসদ’ এর সভাপতি আব্দুল্লাহ আল রাহাত জানান, এমন একটি চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডের ৪ বছরে সুরাহা হয়নি, যা অবাক হওয়ার বিষয়। সবচেয়ে অবাক হওয়ার বিষয় হলো মামলার প্রধান আসামী সরওয়ারকেও আদৌ গ্রেফতার করা হয়নি। প্রধান আসামী গ্রেফতার হলে হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটন হতো।
নিহত সাকিবের বড় ভাই শহিদুল ইসলাম রুবেল বলেন, ভাইকে হারানোর বেদনা প্রতিনিয়ত আমাদের কাঁদায়। আমি মামলার প্রধান আসামী সরওয়ার ও অপর আসামী অপুকে দ্রæত গ্রেফতারের দাবী জানাচ্ছি।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ৬ জুন বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে জেবি উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্র ফারহান সাকিবকে প্রতিবেশী সরোয়ার হোসেন মুক্তিপনের জন্য অপহরণ করে। মুক্তিপন না পেয়ে সরোয়ার ও তার সহযোগিরা মিলে সাকিবকে জবাই করে হত্যা করে লাশ উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের নয়টিলা মাজার এলাকার গহীন পাহাড়ের খাদে ফেলে দেয়। ঘটনার ছয়দিন পর ওই বছর ১২ জুন সাকিবের গলিত লাশ উদ্ধার করে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ। এরপর সাকিবের বড় ভাই রুবেল বাদি হয়ে প্রতিবেশি সরোয়ার হোসেন তার ভাই হোসনে মোবারক রুবেলসহ ৫ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ওইসময় হোসনে মোবারক রুবেল ও শহীদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে আদালতে নিলে সেখানে তারা হত্যার ঘটনা বর্ণনা দিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
Developed By Muktodhara Technology Limited