image

আজ, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ ইং

বিলুপ্তির পথে সীতাকুন্ডের ঐতিহ্যবাহী তালপাতার পাখা

কাইয়ুম চৌধুরী, সীতাকুন্ড প্রতিনিধি    |    ০১:২৪, এপ্রিল ২৭, ২০২১

image

রাতে ঘুমাতে যাওয়ার পর বৈদ্যুতিক পাখা ঘুরার পরও প্রচন্ড গরম অনুভূত, তবুও কোনভাবে মানিয়ে ঘুম। কিন্তু ঘুমের মধ্যে হঠাৎ চলে গেল বিদ্যুৎ, তখন কি উপায়? ঘুম কি আর হয়? তখনই বিপদে বন্ধুর মত কাজ করে হাত পাখাগুলো। তারমধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও আরামদায়ক ঠান্ড বাতাস হলো তালপাতার পাখা। সীতাকুন্ডে গ্রামবাংলার কুটির শিল্পের অন্যতম একটি অংশ তালপাতার পাখা। এক সময় গ্রীষ্মের গরমে হাতপাখা তৈরি ও বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতো সীতাকুন্ডের গ্রামাঞ্চলের কয়েকশত পরিবার। 

উপজেলার সৈয়দপুর, অন্তরখালি, শিবপুর, বহরপুর, মুরাদপুর, টেরিয়াইল, ফেদাইনগর, কুমিরা, বগাচতর, মহানগর, মহাদেবপুর, বাড়বকুন্ড, বাঁশবাড়ীয়াসহ বিভিন্ন গ্রামের কয়েকশত পরিবারের অন্যতম পেশা ছিল তালপাতার পাখা তৈরি ও বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করা।

উপজেলার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহাসিক শিব চতুদর্শী মেলাসহ স্থানীয় হাট-বাজারগুলোতে শোভা পেত তালপাতার পাখাসহ নানান হস্তশিল্প। চৈত্র মাস থেকে শুরু করে ভাদ্র মাস পর্যন্ত চলতো তালপাতার পাখা তৈরি ও বিক্রির ধুম। বর্তমানে ঘরে-ঘরে বৈদ্যুতিক পাখার ব্যবহার, প্লাষ্টিকের তৈরি বিভিন্ন ডিজাইনের হাতপাখার প্রচলন এবং পাখা তৈরির সেই ঐতিহাসিক তালগাছ হারিয়ে যাওয়ায় গ্রামবাংলার সুপরিচিত শোভা ও ঐতিহ্যের তালপাতার পাখা আজ শুধুই স্মৃতি আর স্মৃতি।

তালগাছের পাতায় বাসা তৈরি করে অবস্থান করা বাবুই পাখির সেই কিচির-মিচির শব্দের চির চেনা দৃশ্যের মতো আজ হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামবাংলার শোভা ও ঐতিহ্যের ধারক-বাহক গরমের স্বস্থি তালপাতার পাখা। তালপাতার পাখা তৈরির সাথে জড়িত সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলো তখন চৈত্র মাস থেকে নিজস্ব উদ্যোগ ও অর্থায়নে হাতপাখা তৈরির কাজ অগ্রিম শুরু করতো। তখন আর্থিকভাবে দূর্বল পরিবারগুলো অপেক্ষাকৃত স্বচ্ছল আত্মীয়স্বজন কিংবা নিকট প্রতিবেশীদের কাছ থেকে অগ্রিম পাখা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় টাকা সংগ্রহ করতো। 

উপজেলার বাড়বকুন্ডের অলিনগরের বাসিন্দা জেবুরনেছা (৭৯) জানান, এক সময় গ্রামাঞ্চলে বৈদ্যুতিক পাখার তেমন একটা প্রচলন ছিল না। হাতে গনা কতেক স্বচ্ছল পরিবারে টেবিল ফ্যান দেখা যেতো। গরমের কারনে মাটির তৈরি ঘরের ছিল বিশেষ গুরুত্ব। গ্রীষ্মের প্রখর রোদ এবং তীব্র গরম হতে স্বস্তি পেতে তালপাতা কিংবা বাঁশ-বেতের তৈরি হাতপাখার উপর নির্ভর করতো শ্রমজীবি পরিবারগুলো। তখন হাট-বাজারে প্রচুর বিক্রি হতো তালপাতার পাখা।

কলেজ রোডে ১যুগ ধরে তালপাতার পাখা ব্যবসায়ের সাথে জড়িত রাহুল ভট্টাচার্য জানান, সীতাকুন্ডে তালপাতার পাখা তৈরির সেই কুঠির শিল্প হারিয়ে গেলেও চাহিদা শেষ হয়ে যায়নি। এখনও দৈনিক ৫৫-৬০টি তালপাতার পাখা বিক্রি করছি। মেলার সময় ১০০-১৫০ পর্যন্ত হাতপাখা বিক্রি হয়েছে। সীতাকুন্ডে চাহিদা মতো তৈরি না হওয়ায় সপ্তাহে চট্টগ্রামের লালদীঘি থেকে প্রায় ৪০০ টি হাতপাখা দোকানের জন্য আনতে হয়। 



image
image

রিলেটেড নিউজ

Los Angeles

০১:১৭, মে ১৪, ২০২২

বাঁশখালী ইউপি নির্বাচনে নৌকায় শেষ হাসি যাঁদের


Los Angeles

০০:৩০, মে ১৪, ২০২২

কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক ঘেষে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাঁটাতারের বেড়া


Los Angeles

১৬:২৬, অক্টোবর ১৬, ২০২১

বীর নিবাস পাচ্ছেন বাঁশখালীর ১০ মুক্তিযোদ্ধা


Los Angeles

২০:৩৩, অক্টোবর ১৩, ২০২১

তিন প্রতিবন্ধী সন্তান নিয়ে বিপাকে বাঁশখালীর এক দরিদ্র পরিবার


Los Angeles

১১:২৪, অক্টোবর ১০, ২০২১

সীতাকুন্ড ইউপি নির্বাচন : নৌকা দাবি ৪৩জনের


Los Angeles

২০:১৯, অক্টোবর ৮, ২০২১

আবিষ্কারের বিস্ময় বালক বাঁশখালীর আশির, প্রয়োজন পৃষ্ঠপোষকতা


Los Angeles

২১:৩৮, অক্টোবর ৭, ২০২১

করোনাকালে বাল্যবিয়ে : পড়ালেখায় ইতি টেনে অনেক কিশোরী এখন পুরোদস্তুর সংসারী


image
image