image

আজ, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ইং

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র আহবায়ক কমিটি : তৃণমুলে ক্ষোভ, পদ বাণিজ্যের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক    |    ১৭:১৪, অক্টোবর ৫, ২০১৯

image

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। 

২ অক্টোবর (বুধবার) দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কর্তৃক স্বাক্ষরিত ৬১ সদস্য বিশিষ্ট এ কমিটি নিয়ে তৃণমূলে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। দল সংশ্লিষ্ট অনেকে অর্থের বিনিময়ে পদ দেয়ার অভিযোগও তুলেছেন দায়িত্বশীল অনেক নেতার বিরুদ্ধে।

ঘোষিত কমিটিতে নগর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আবু সুফিয়ানকে আহ্বায়ক, কর্ণফুলী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আব্বাসকে যুগ্ম আহবায়ক ও বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোস্তাক আহমদ খানকে সদস্য সচিব মনোনীত করা হয়েছে। ৬৫ সদস্যের এ কমিটিতে একই নির্বাচনী এলাকা থেকে আহবায়ক ও সদস্য সচিব নির্বাচন, নিষ্ক্রিয় অনেকের পদ লাভ, ত্যাগী অনেক নেতাকে বাদ দেয়াসহ নানা অভিযোগ তুলেছেন বঞ্চিতদের অনুসারীরা।

৮ উপজেলা এবং ৫ পৌরসভার সমন্বয়ে গঠিত এ সাংগঠিনক জেলার ঘোষিত কমিটিতে একই নির্বাচনী এলাকা থেকে আহবায়ক ও সদস্য সচিব মনোনীত করায় তৃণমুলে অসন্তোষ বিরাজ করছে। তাছাড়া সাবেক ছাত্র ও যুবদল নেতা, একাধিকবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান, সদ্য বিলুপ্ত কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা এমন অনেক নেতার বাদ যাওয়াকেও রহস্যময় বলছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। 

উল্লেখ্য, আহবায়ক আবু সুফিয়ান নগর রাজনীতির সাথে যুক্ত হলেও তিনি বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বোয়ালখালী আসন থেকে দলীয় প্রার্থী ছিলেন। অপরদিকে সদস্য সচিব মোস্তাক আহমদ খানও বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত। তাছাড়া এক নেতা এক পদ নীতিও এখানে অনুসৃত হয়নি। তারা দুজনেই দুটি পদে আসীন রয়েছেন।

ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটিতে সদস্য হিসাবে যারা স্থান পেয়েছেন তারা হলেন, বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী (বাশখালী), এড. কবির চৌধুরী (আনোয়ারা), অধ্যাপক শেখ মো. মহিউদ্দিন (সাতকানিয়া), এনামুল হক এনাম (পটিয়া), ইদ্রিস মিয়া (পটিয়া), এড. দেলোয়ার হোসেন চৌধুরী (বাশখালী), এড. ইফতেখার হোসেন চৌধুরী মহসিন (বাশখালী), মোশারফ হোসেন (আনোয়ারা), শহিদুল আলম বুলবুল (বাশখালী), এম.এ রহিম (পটিয়া), এড. মিজানুল হক (চন্দনাইশ), আলমগীর কবির চৌধুরী (বাশখালী), নূরুল আনোয়ার (চন্দনাইশ) এড. ফোরকান (কর্ণফুলী), আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী (সাতকানিয়া), বদরুল খায়ের চৌধুরী (পটিয়া), এহসান এ খান  (কর্ণফুলি), আসহাব উদ্দিন চৌধুরী (লোহাগাড়া), এম. মঞ্জুর উদ্দিন চৌধুরী (আনোয়ারা), কামরুল ইসলাম হোসাইনী (বাশখালী), এস.এম মামুন মিয়া (কর্ণফুলী), নাজমুল মোস্তফা আমিন (লোহাগাড়া),  চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান (সাতকানিয়া), মোজাফ্ফর আহাম্মেদ টিপু (পটিয়া), চেয়ারম্যান আজিজুল হক (বোয়ালখালী), চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী (বাশখালী), এড. নূরুল ইসলাম (চন্দনাইশ), জহিরুল ইসলাম চৌধুরী আলমগীর (বাশখালী), আবুল কালাম আবু (বোয়ালখালী), সিরাজুল ইসলাম (চন্দনাইশ), মোস্তাফিজুর রহমান (আনোয়ারা), আবু মো. নিপার (আনোয়ারা), এড. ফৌজুল আমিন (আনোয়ারা), খোরশেদ আলম (পটিয়া), মফজল আহমদ চৌধুরী (পটিয়া), নুরুল ইসলাম সওদাগর (পটিয়া), জামাল হোসেন (সাতকানিয়া), মোজাম্মেল হক ভিপি (আনোয়ারা), মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী জাহেদ (আনোয়ারা), হুমায়ন কবির চৌধুরী আনসার চেয়ারম্যান (আনোয়ারা), লায়ন হেলাল উদ্দীন (আনোয়ারা), আমিনুর রহমান চৌধুরী (বাশখালী), হাজী রফিক (সাতকানিয়া), নবাব মিয়া (সাতকানিয়া), মো. ইসহাক (বোয়াখালী), হামিদুল হক মান্নান চেয়ারম্যান (বোয়ালখালী), এহসানুল মাওলা (সাতকানিয়া), নূরুল কবির (সাতকানিয়া), মইনুল আলম ছোটন (পটিয়া), মোক্তার আহমেদ (চন্দনাইশ), শফিকুল ইসলাম চেয়ারম্যান হাবিলাসদ্বীপ (পটিয়া), জিয়া উদ্দিন আশফাক (আনোয়ারা), সাজ্জাদ হোসেন (লোহাগাড়া), লোকমান হোসেন মানিক (সাতকানিয়া), মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী (বাশখালী), এড. আবুল কাশেম চৌধুরী (বাশখালী), জসিম উদ্দিন আব্দুল্লাহ্ (সাতকানিয়া), জসিম উদ্দিন (চন্দনাইশ), এস.এম সলিম উদ্দিন খোকন চৌধুরী (লোহাগাড়া), বাবু চন্দ্র গুপ্ত  বড়ুয়া (বাশখালী), শওকত আলম (বোয়ালখালী) ও কমিশনার নিলুফা ইয়াসমিন (বাশখালী)।

এদিকে ঘোষিত কমিটি নিয়ে বাণিজ্য হয়েছে বলেও তৃণমুলের অনেকের দাবী। তাদের দাবী এতবড় একটি সাংগঠনিক জেলায় বিএনপি’র মতো সংগঠনের নেতার সংকট থাকার কথা নয়। যদি তা-ই হবে, তবে একই উপজেলা বা নির্বাচনী এলাকা থেকে কেন আহবায়ক ও সদস্য সচিব মনোনীত করতে হবে ?

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির চট্টগ্রামের অনেক কেন্দ্রীয় নেতাই বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে রাজী হননি।

দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র বিগত কোন কমিটিতেই ছিলেন না এমন অন্তত ৮ জনকে এবার কমিটিতে সদস্য করা হয়েছে। এছাড়া বিগত কমিটিতে থাকলেও নিষ্ক্রিয় ছিলেন এমন ৭জনকেও সদস্য করা হয়েছে। আনোয়ারার সাবেক বিএনপি নেতা জামাল উদ্দীন হত্যা মামলার একজন আসামিকেও সদস্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ আছে।

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে গঠন করা হয়েছিল চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র কমিটি। ওই সময় জাফরুল ইসলাম চৌধুরীকে সভপতি ও শেখ মোহাম্মদ মহিউদ্দীনকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছিল। যা দলটির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া অনুমোদনও দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে ২০১১ সালের এপ্রিলে আবারো পুনর্গঠন করা হয়। সেবার জাফরুল ইসলাম চৌধুরীকে সভাপতি ও গাজী শাজাহান জুয়েলকে করা হয় সাধারণ সম্পাদক ও শেখ মোহাম্মদ মহিউদ্দীনকে সহ-সভাপতি করা হয়। তিন বছরের জন্য গঠিত এ কমিটি আট বছর পাঁচ মাস পার করার পর তা ভেঙ্গে নতুন আহবায়ক কমিটি দিল দলটির কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীলরা।

এদিকে দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র গঠন প্রক্রিয়া শুরুর সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে আলাপ করেন। এইক্ষেত্রে কেন্দ্র যাদের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব করার কথা ভেবেছে তারা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হওয়ার আগ্রহ দেখান। ফলে বাধ্য হয়ে কেন্দ্র এমন একজনকে আহ্বায়ক করার কথা ভাবছে, যিনি পরবর্তীতে কাউন্সিলে সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক হওয়ার আগ্রহ দেখাবেন না। এইক্ষেত্রে নগর বিএনপি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ানকে বাছাই করা হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

প্রায় ১০ বছর পর জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি গঠন করা হলেও নির্ধারিত সময়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা প্রায় অসম্ভব বলে অভিমত সংশ্লিষ্টদের। প্রতিটি সাংগঠনিক কমিটিতে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন শেষে জেলা কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে, যা কষ্টসাধ্য বলে ধারণা নেতাকর্মীদের।



image
image

রিলেটেড নিউজ

Los Angeles

১২:৪১, মে ১৩, ২০২২

এক হাজার অটোরিক্সা ডাম্পিং করলো চট্টগ্রাম বিআরটিএ


image
image