image

আজ, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ইং

ঐক্যের কেন্দ্রবিন্দুতে আসলাম চৌধুরী : আপাতত হচ্ছেনা চট্টগ্রাম উত্তরের কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক    |    ১৩:৫৯, ডিসেম্বর ৭, ২০২০

image

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি’র আহবায়ক ও কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব কারাবন্দী আসলাম চৌধুরীর আকাশসম জনপ্রিয়তায় তার অনুপস্থিতিতে নতুন কমিটি গঠনে অনীহা দেখাচ্ছেন উত্তরের নেতারা। কারাবন্দী এ নেতাকে ঐক্যের প্রধান নিয়ামক হিসেবে তুলে ধরে নেতাদের অভিমত, আসলাম চৌধুরীর বিকল্প এ মুর্হুতে উত্তরের রাজনীতিতে অনুপস্থিত। তাই তিনি বের হলে কমিটি গঠন করা শ্রেয় হবে বলে তাদের দাবী।দলের জন্য কারাবরণসহ অনেক ত্যাগ আর সংগ্রামের যে নজির আসলাম চৌধুরী তুলে ধরেছেন তা মূল্যায়নের জন্যই কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় তার সরাসরি অংশগ্রহণ সময়ের দাবী বলে নেতাকর্মীদের দাবী।

২০১৬ সালের মে মাসে গ্রেপ্তার হয়ে কারান্তরীণ রয়েছে বিএনপি’র যুগ্ম-মহাসচিব আসলাম চৌধুরী। তিনি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি’রও আহবায়ক। আন্দোলন সংগ্রামে সাহসী ও সময়োপযোগী সক্রিয়তার কারণে তিনি দলের নেতাদের কাছে যেমনি সমাদৃত তেমনি উত্তর দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম মহানগরেও সমান জনপ্রিয়। বিএনপি’র কর্মসূচী থেকে শুরু করে দলের নেতাদের সকল আপদে তার সর্বাত্মক সহযোগিতার কারণে এক অনন্য স্থান রয়েছে তার দলের ভিতরে। তাই চট্টগ্রাম উত্তরের সকল নেতার অনুসারীরাই চান যে, আসলাম চৌধুরীর মুক্তির পর তার মতামতের ভিত্তিতেই কমিটি হোক।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলার রাজনীতিতে কোন্দল গ্রুপিং অনেক পুরোনো। সময়ের বিবর্তণে অনেক গ্রুপ, উপগ্রুপ হারিয়ে শেষ পর্যন্ত আসলাম চৌধুরী ও গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী বলয়ের দুটি শক্তিশালী ধারা বিদ্যমান এখনও। অবশ্যই গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী বিদেশে পাড়ি দেয়ার পর থেকে তার গ্রুপেরও হাল ধরার তেমন যোগ্য উত্তরসূরী তৈরী হয়নি। ফলে আসলাম চৌধুরী জেলে থাকলেও তার অনুসারীরা এখনও আগের মতো সক্রিয় থাকায় তার অবর্তমানে কমিটি গঠনে দ্বিধাদ্বন্ধে রয়েছেন হাই কমান্ড।

২০১১ সালে গিয়াস কাদেরকে সভাপতি এবং আসলাম চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে গঠন করা হয়েছিল চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির কমিটি। ওই সময় গোলাম খোন্দকারকে করা হয় কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক। এই কমিটি গঠনের পর থেকে গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আসলাম চৌধুরীর মধ্যে দ্বন্দ্ব অনেকটা প্রকাশ্যে চলে আসে। এ পরিস্থিতিতে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীকে বাদ দিয়ে আসলাম চৌধুরীকে আহবায়ক এবং গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী কাজী আবদুল্লাহ আল হাছানকে সদস্য সচিব করে ২০১৪ সালে আরেকটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে পরবর্তী ৪৫ দিনের মধ্যে জেলার প্রতিটি থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি গঠনের পর সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি করতে বলা হয়। আর এ কমিটি করতে গিয়েই দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন আহব্বায়ক ও সদস্য সচিব। পরে ২০১৮ সালের জানুয়ারীতে সদস্য সচিব কাজী আব্দুল্লাহ আল হাছান মারা গেলে তার পদটিও শূণ্য হয়।

এদিকে উত্তর জেলার সাবেক সভাপতি, কেন্দ্রীয় নেতা গোলাম আকবর খোন্দকারকে আহবায়ক করে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটি ঘোষণা হচ্ছে এমন বাতাস বইছে উত্তরের বিএনপি রাজনীতিতে। এতে নড়ে চড়ে বসেছেন গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারীরা। তারা কারাবন্দী আসলাম চৌধুরীর অনুসারীদের সাথে দফায় দফায় আলোচনা শেষে ওনার মতামতের ভিত্তিতে কমিটি গঠনের বিষয়ে ঐক্যমতে পৌঁছেছেন। ঐক্য প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আসলাম চৌধুরী জেল থেকে বের না হওয়া পর্যন্ত কমিটি গঠন স্থগিত রাখা অথবা একজন আহবায়ক, একজন সদস্য সচিব ও প্রতি উপজেলা থেকে একজন করে যুগ্ম আহবায়ক রেখে কমিটি গঠনের প্রস্তাবের কথা জানান দলীয় মহাসচিবকে।

ঐক্য প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে আসলাম চৌধুরীর অনুসারী উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ও চাকসু ভিপি নাজিম উদ্দিন বলেন, দলে গ্রুপিং লবিং থাকবে অস্বীকার করছিনা। কিন্তু দলের দুঃসময়ে ঐক্যের বিকল্প নেই। আসলাম চৌধুরী সে ঐক্যের কেন্দ্রবিন্দু। আমরা তাই সব ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে সামনে এগুতে চাই।

গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির আরেক সদস্য ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন বলেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশনা মতে বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়া। ছয়মাস আগে ঐক্য প্রক্রিয়া শুরু হয়। এটা হঠাৎ করে নয় কিংবা কাউকে ঠেকানো বা কমিটি গঠন প্রক্রিয়া ভুন্ডুল করার জন্য নয়। দলের বৃহত্তর স্বার্থে আমরা সকল ভেদাভেদ ভুলে আগাতে চাই।

এদিকে দলীয় দায়িত্বশীল অনেকগুলো সূত্র নিশ্চিত করেছে, আপাতত চট্টগ্রাম উত্তরের কমিটি গঠন প্রক্রিয়া আরও কিছুদিন বিলম্বিত হতে পারে। আসলাম চৌধুরীর মুক্তির বিষয়টাকে প্রাধান্য দিয়ে এ বিষয়ে সিন্ধান্ত নেয়া হবে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।



image
image

রিলেটেড নিউজ

Los Angeles

১২:৪১, মে ১৩, ২০২২

এক হাজার অটোরিক্সা ডাম্পিং করলো চট্টগ্রাম বিআরটিএ


image
image