image

আজ, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং

যে মামলায় একদিনে ২০ সাক্ষী,চার দিনপরই রায়ঃ আলোচনায় হাজী সেলিম

ঢাকা ব্যুরো    |    ১১:৩৯, মার্চ ১৩, ২০২১

image

হাজী সেলিম (ফাইল ছবি)

আবারও আলোচনায় হাজী মোঃ সেলিম। ১/১১ এর সেনা সমর্থিত ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিন সরকারের আমলে ঢাকার নিম্ন আদালতে চার্জশীট দেয়ার চারদিন পরই একদিনে ২০ জনের সাক্ষী নিয়ে  দুদকের দায়ের করা দুটি মামলায় হাজী মোঃ সেলিম দম্পতির সাজা হয়। সম্প্রতি দুদকের আপিল করা এই মামলায় হাজী মোঃ সেলিমের ১০ বছরের সাজা বহাল রাখে উচ্চ আদালত। সেই সঙ্গে তার স্ত্রী গুলশান আরা সেলিম (মৃত্যুর কারণে)কে এই মামলা ও সাজা থেকে অবহতি দেয়া হয়।

দূদকের দায়ের করা হাজী মোঃ সেলিমের বিরুদ্ধে সম্পদ গোপনের মামলায় ৩ বছরের সাজা বাতিল করে উচ্চ আদালত। পুরান ঢাকার বহুল আলোচিত ঢাকার এই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে বহাল থাকা সাজা নিয়ে ঢাকাবাসীর মধ্যে নানা জল্পনা-কল্পনার জন্ম দিয়েছে।

৯০ দশকে পুরান ঢাকার সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে একসঙ্গে দুই দু’টি ওয়ার্ডে নির্বাচন করে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে হাজী মোঃ সেলিমের জনপ্রতিনিধিত্বের যাত্রা শুরু হয়।

১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগের টিকেটে ঢাকার সাবেক মেয়র ও মন্ত্রী ব্যারিস্টার আবুল হাসনাতকে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

২০০১ সালে সামান্য ভোটের ব্যবধানে বিএনপির প্রার্থী ছাত্রনেতা নাসির উদ্দীন পিন্টুর সঙ্গে হেরে যান। ওই সময় আওয়ামীলীগের অনেক নেতার বিরুদ্ধে নৌকার পক্ষে মাঠে না থাকার অভিযোগও ওঠে।

২০১৪ সালে দল থেকে মনোনয়ন না পেলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েও সরকার দলীয় প্রার্থী  ডাঃ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনকে হারিয়ে আবারও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

২০১৮ সালে আবারও আওয়ামীলীগের প্রার্থী হয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা মহসিন মন্টুকে হারিয়ে পুরান ঢাকায় তিন বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার অনন্য নজির স্থাপন করেন।

দল কিংবা স্বতন্ত্র যা-ই হোক না কেন, তিনি যেন ভোটের রাজনীতিতে এক যাদুকরি  নেতা। বার বার নির্বাচিত পুরান ঢাকার এই নেতার ভাগ্যে এখন কি আছে এ নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা।

অনেক আওয়ামীলীগ নেতা এই ঢাকা- ৭ আসনে আওয়ামীলীগ দলীয় সংসদ সদস্য হওয়ার হিসাব কষতে শুরু করেছেন। তবে হাজী সেলিমের অনুসারীরা মনে করেন এটা ষড়যন্ত্রকারীদের দিবাস্বপ্ন। গত সপ্তাহে রায়ের পর দুদকের আইনজীবী তার সংসদ সদস্য পদ থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেও তা নির্ভর করবে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে চূড়ান্ত নিষ্পত্তির পরই। এমনটাই জানিয়েছেন হাজী সেলিমের আইনজীবী।

সংসদ সদস্য হাজী মোঃ সেলিমের আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা জানিয়েছেন, হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।

এদিকে হাজী মোঃ সেলিমের বিরুদ্ধে ১/১১ এর সেনা শাসনের সময় নিম্ন আদালতের দেয়া এই সাজা বহাল থাকা নিয়ে ক্ষুদ্ধ হয়েছেন তার অনুসারীরা ।

জানা গেছে ১/১১ এর ফখরুদ্দিন- মঈনুদ্দিনের শাসনামলে হাজী মোঃ সেলিম দেশের বাহিরে ছিলেন।

দুদকের দায়ের করা মামলায় হাজী মোঃ সেলিমের আইনজীবী জানিয়েছেন, ওই সময় দেশে জরুরি অবস্থা জারি থাকায় নিম্ন আদালতে ন্যায় বিচার পাওয়া যায়নি। কারণ হাজী মোঃ সেলিমের বিরুদ্ধে চার্জশীট দেয়ার চার দিন পরই একদিনেই ২০ জনের সাক্ষী নিয়ে তাদের কোন জেরা করার সুযোগ না দিয়েই অনেকটা একতরফা রায় দেয়া হয়েছে। যার ফলে হাজী সেলিম ন্যায় বিচার পাননি বলে তিনি মনে করেন।

তিনি বলেন, একদিনে ২০ জনের সাক্ষ্য নেয়া এবং সাক্ষীদের কোন জেরা করার সুযোগ না দিয়ে যে রায় দেয়া হয়েছে তা আমরা আদালতের নজরে আনলেও আমলে নেয়া হয়নি।

তিনি বলেন একদিনে ২০ জনের সাক্ষ্য এবং জেরা করার সুযোগ না দিয়ে যে রায় দিলো নিম্ন আদালত তা কতটুকু ন্যায় বিচার  নিশ্চিত হয়েছে এটা সাধারণ মানুষেরও বুঝতে বাকি নেই।

এদিকে হাজী মোঃ সেলিমের বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতের দেয়া সাজা নিয়ে তার অনুসারীদের মাঝে ওই সময় থেকে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তাদের মতে ফখরুদ্দীন-মঈনুদ্দিনের শাসনামলে নিম্ন আদালত স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ধরে এনে নেতা ও ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সাক্ষী দিতে বাধ্য করতো। এটা কারোই অজানা নয়। বাংলাদেশের ইতিহাসে একদিনে ২০ জনের সাক্ষ্য ও জেরা করার সুযোগ না দিয়ে চার্জশিট দেয়ার ৪ দিন পরেই রায় দেয়া কতটুকু ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়, এটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

পুরান ঢাকার বার বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য হাজী মোঃ সেলিমের অনুসারী হাসান মনে করেন, পুরান ঢাকার এই নেতার বিরুদ্ধে চরম অন্যায় করা হয়েছে। তিনি মনে করেন উচ্চ আদালতে হাজী সেলিম ন্যায় বিচার পাবেন।

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুরান ঢাকার লালবাগ, চকবাজার ও বংশাল থানার একাধিক আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা জানান, পুরান ঢাকায় আন্দোলন ও আওয়ামিলীগের ভোটের রাজনীতি পূনঃপ্রতিষ্ঠার জনক হাজী মোঃ সেলিম। বার বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া-ই এখন তার অপরাধ। হাজী সেলিমের ভক্ত ও অনুসারীরা মনে করেন যারা ভোটের রাজনীতিতে হাজী সেলিমের জনপ্রিয়তার সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে পারছেন না, তারাই এখন তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। কারণ অসুস্থ শরীর নিয়েও করোনাকালীন সময়ে হাজী মোঃ সেলিম এলাকায় জনকল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন।

জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু কণ্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পুরান ঢাকার মানুষের জন্য তিনি দলের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছেন। হাজী সেলিম ৯০ দশকের মাঝামাঝি সময় থেকেই পুরান ঢাকায় শান্তির স্বপক্ষে, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঢাকাবাসীকে ঐক্যবদ্ধ করে সামাজিক আন্দোলন করে আসছেন। পুরান ঢাকাবাসী মনে করেন, হাজী  মোঃ সেলিমের সব চেয়ে বড় গুণ তিনি নির্বাচনে দাঁড়ালে কারো কাছ থেকে এক টাকাও চাঁদা নেন না। চাঁদাবাজ আর সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তিনি দুই যুগ ধরেই অবস্থান নিয়ে আসছেন।

হাজী সেলিমের অনুসারীরা মনে করেন, তার জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে একটি মহল তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। হাজী সেলিমের অনুসারী ও দলের নেতারা মনে করেন সকল ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে আইনী প্রক্রিয়ায় মুক্ত হয়ে হাজী মোঃ সেলিম ঢাকাবাসীর জনপ্রিয় নেতা হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করবেন ইনশাল্লাহ।


গুলশান আরা সেলিম ফাউন্ডেশনঃ সামাজিক উন্নয়নে পথচলা শুরু

হাজী সেলিমের সহধর্মিনীর চেহলাম আয়োজনে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন

হাজী সেলিমের স্ত্রী গুলশান আরা সেলিমের কুলখানি অনুষ্ঠিত

শ্বাশুড়ির কবরেই চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন গুলশান আরা সেলিম

আলোচনা-সমালোচনায় ঢাকাইয়া ব্রান্ড হাজী সেলিম 


image
image

রিলেটেড নিউজ

Los Angeles

২৩:০৯, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২১

পুলিশের ভয়ে নদীতে ঝাপ দিয়ে কিশোরীর আত্মহত্যা


Los Angeles

১৬:২৫, সেপ্টেম্বর ৯, ২০২১

এসি আকরামের জবানবন্দিঃ ২২ খুনের মামলার আসামি ছিলেন কুখ্যাত ইমদু


Los Angeles

২০:০৫, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২১

এসি আকরামের জবানবন্দিঃ ইমদু এক ভয়ংকর খুনীর নাম


Los Angeles

২৩:৪৯, সেপ্টেম্বর ৬, ২০২১

রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে ছুরিকাঘাতে যুবক খুন


image
image